fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িঅন্যান্যদুই দিন আটকে দুই ছাত্রীকে গণধর্ষণ, এসআই ও এক নেতার বিরুদ্ধে ‘সালিশ...

দুই দিন আটকে দুই ছাত্রীকে গণধর্ষণ, এসআই ও এক নেতার বিরুদ্ধে ‘সালিশ বাণিজ্যের’ অভিযোগ

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দুই মাদরাসাছাত্রীকে একটি বাড়িতে আটকে রেখে সাত-আটজন মিলে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে মেয়ে দুটিকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় ডাসা থানার এক উপপরিদর্শক ও আওয়ামী লীগ নেতা নির্যাতিত দুই কিশোরীর পরিবারকে মামলা করা থেকে বিরত রাখেন। ঘটনাটি যাতে কাউকে না জানায় সে জন্য হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে গত শুক্রবার গভীর রাতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় নয়ন, শাকিব ও হৃদয়ের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো কয়েকজনকে আসামি করে ডাসা থানায় একটি মামলা হয়েছে। এরপর দুই কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনা সালিসযোগ্য নয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। যদি এ অপরাধের (সালিসের উদ্যোগ) সঙ্গে পুলিশের কোনো সদস্যের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার এলাকার একটি মাদরাসার পঞ্চম ও সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে গত বুধবার একটি বাড়িতে নিয়ে যায় মজিবুর হাওলাদারের ছেলে শাকিব, জাকির মোল্লার ছেলে নয়ন, মান্নান খানের ছেলে আল-আমিন, হুমায়ুন হাওলাদারের ছেলে হৃদয় ও তার বন্ধুরা। ওই বাড়িটি নয়নের চাচা মাহবুব সরদারের। তিনি বাড়িতে থাকেন না। দোতলা ওই বাড়িতে আটকে রেখে মেয়ে দুটিকে ধর্ষণ করে তারা। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন মেয়েদের আটকে রাখার বিষয়টি জানতে পারে এবং তাদের উদ্ধার করে। তখনই অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।

নির্যাতনের শিকার এক ছাত্রী জানায়, তার সঙ্গে শাকিবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার বান্ধবীর সঙ্গে একই সম্পর্ক ছিল হৃদয়ের। বুধবার তাদের মাদরাসা থেকে ফোনে ডেকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে মাদারীপুর শহরসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায় শাকিব ও হৃদয়। এরপর তাদের বিয়ে করার কথা বলে ওই বাড়িতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। কিন্তু তারা যখন চলে আসতে চায় তখন তাদের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। পরে শাকিব ও হৃদয়ের সঙ্গীরা তাদের ধর্ষণ করে।

এক কিশোরীর মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাতব্বররা সালিস-মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে আমাদের মামলা করতে দেননি। বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্যও হুমকি দিয়েছেন এবং মেয়েকে কয়েক দিন লুকিয়ে রাখতে বলেছেন।’

আরেক কিশোরীর মা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আপনাদের কাছে কিছু বললে আমাদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের স্থানীয় এক নেতা অভিযোগ করেন, ডাসা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও বালিগ্রাম ইউয়িন শাখা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যন মতিন মোল্লা মীমাংসার কথা বলে অভিযুক্তদের পরিবারের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে মতিন মোল্লা বলেন, ‘মেয়েপক্ষের লোকজন বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে আমার কাছে এসেছিল। তবে আমি টাকাও নিইনি, মীমাংসাও করিনি।’

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments