fbpx
শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
বাড়িজাতীয়অপরাধমসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লাশ, নিহতের স্ত্রী গ্রেফতার

মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লাশ, নিহতের স্ত্রী গ্রেফতার

ঢাকার দক্ষিণখানে একটি মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লাশ পাওয়ার পর ওই মসজিদের ইমামের পর নিহতের স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মো. আজহার (৩০) নামে ওই পোশাক শ্রমিকের লাশ মঙ্গলবার ভোররাতে পাওয়ার পরপরই মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

আজহারের স্ত্রী আসমা আক্তারকেও পরে গ্রেপ্তার করা হয় বলে মঙ্গলবার রাতে জানিয়েছেন র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা এএসপি মুশফিকুর রহমান তুষার।

ইমাম রহমান এই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে বিকালে র‌্যাবের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। আজহারের স্ত্রীও এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে র‌্যাবের সন্দেহ।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম।

দক্ষিণখানে ‘মাদ্রাসাতুল রাহমানিয়া আল আরাবিয়া‘ নামের মাদ্রাসার পাশেই সরদার বাড়ী জামে মসজিদ। এই মসজিদে ৩৩ বছর ধরে ইমামতি করে আসছিলেন মাওলানা আব্দুর রহমান। পাশাপাশি মাদ্রাসায় পড়াতেন তিনি।

মসজিদের কাছেই একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে থাকতেন আজহার। তার ছেলে ওই ইমামের কাছে আরবি শিখত। ফলে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল।

ইমাম রহমানকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরদার বাড়ী জামে মসজিদের সিঁড়িতে রক্তের দাগ এবং সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার খবর পেয়ে তারা সেখানে যান। তখনই জানতে পারেন আজহার নামে এক ব্যক্তি গত ১৯ মে থেকে নিখোঁজ।

তিনি বলেন, “এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ইমামকে ভোররাতে মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সকালে মসজিদের সেফটিক ট্যাংক থেকে গলিত অবস্থায় আজহারের লাশ উদ্ধার করা হয়।”

তিনি বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে ইমাম রহমানের সম্পর্ক রয়েছে বলে আজহার সন্দেহ করতেন। ১৯ মে রাতে আজহার মসজিদের দোতলায় ইমাম রহমানের ঘরে গিয়ে এনিয়ে তার সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ান।

রহমানের ‘স্বীকারোক্তি’ উদ্ধৃত করে র‌্যাব কর্মকর্তা মোত্তাকিম বলেন, “এক পর্যায়ে ঘরে থাকা ধারলো অস্ত্র দিয়ে আজহারকে কোপ দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

“পরে ভোর পর্যন্ত একাই লাশ ছয় টুকরা করে নিচে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন আব্দুর রহমান। পরে মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য পাশে রাখা সিমেন্ট দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেন।”

র‌্যাব জানায়, আজহার দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণখান এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তার শিশু সন্তান মাদ্রাসায় পড়তে যাওয়ার কারণে ইমামের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে উঠে।

র‌্যাব কর্মকর্তা মোত্তাকীম বলেন, “আজহারও ইমামের কাছে কোরআন পড়তে যেতেন। বাবা সন্তান এক সাথে পড়ার কারণে যে সম্পর্ক তৈরি হয়, তা আজহারের বাসা পর্যন্ত গড়ায়। ইমাম বাসায় আসতেন, খেতেন। ভালো রান্না হলে ইমামের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ইমামের সঙ্গে আজহারের স্ত্রীর পরকীয়া ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজহারের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”

রাতে আসমাকেও গ্রেপ্তারের কথা জানায় র‌্যাব।

আজহারকে খুনের পর লাশ টুকরা করে সেপটিক ট্যাংকে ভরে রক্ত মুছে রহমান মসজিদে ফজরের নামাজে ইমামতি করেছিলেন বলে জানায় র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘটনার পর না পালিয়ে মসজিদের যে কক্ষে থাকতেন, সে কক্ষ ছেড়ে পাশে মাদ্রাসার একটি কক্ষে থেকে যথারীতি ছয় দিন ধরে নামাজে ইমামতি করে আসছিলেন রহমান।

স্থানীয়দের উদ্ধৃত করে র‌্যাব-১ অধিনায়ক মোত্তাকিম বলেন, “ঘরের রক্ত মুছে নিজে গোসল করে ফজরের নামাজে যথারীতি ইমামতি করেন আব্দুর রহমান।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments