আজ বুধবার ভোর থেকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বাতাসের গতিবেগ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলীয় মানুষের মধ্যে ঝড়ের চেয়ে জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক বেশি ভর করেছে।
মঙ্গলবার রাতের জোয়ারে প্রভাবে নদ-নদীর পানি গাবুরা ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানের বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে উপচে যাচ্ছে। রাতে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কেয়াখালে একটি জেলে নৌকা ডুবে গেলেও কোনো প্রাণহানি হয়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে জোয়ারে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থান দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ উপচে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকছে।
বুধবার ভোরে দেখা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন নদনদী ভাটার সময়ও উত্তাল। দমকা বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে। তবে বৃষ্টি হচ্ছে থেমে থেমে। কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুড়িগুড়ি। শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর এলাকায় নদীর ধারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে অনেকেই তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। বন বিভাগ ও কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে নৌযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ বিতরণে জন্য।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আটটি টহল ফাঁড়ির সদস্যদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সুন্দরবনে অবস্থানরত মৌয়াল ও জেলেদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
শ্যামনগরে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে জোয়ারের পানি তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। গাবুরা ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের নেবুবুনিয়া, নাপিতখালি, গাগড়ামারি, জেলেখালি এলাকা দিয়ে নদীর পানি উপচে চিংড়ি ঘেরে প্রবেশ করে।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের সিংহড়তলী এলাকা দিয়ে চুনকুড়ি নদীর পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকে। একইভাবে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাউনিয়া এলাকা দিয়ে কপোতাক্ষ নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে। আজ ভোর থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় জিও ব্যাগ দিয়ে ওই সব এলাকায় বাঁধ মজবুত ও উচ্চতা বাড়ানোর কাজ করছে স্থানীয়রা।
শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল হক জানান, ঝোড়ো হাওয়া কিংবা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বুধবার সকাল পর্যন্ত সেখানে বড় ধরনের সমস্যা হয়নি। তবে গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ, কৈখালি, রমজাননগর, কাশিমাড়ি ও পগ্মপুকুর ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ৪৩টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব স্থানে মাটি দিয়ে বাঁধ মজবুত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগরের শাখা কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, সিংহড়তলী এলাকায় মঙ্গলবার রাতে ২১০ জন গ্রামবাসী একত্রে কাজ করে লোকালয়ে পানি ঢোকা বন্ধ করেছেন। আজ সকাল থেকে আবার দুর্বল বাঁধে মাটি দেওয়ার কথা রয়েছে।