fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িজাতীয়অপরাধএসআই এর বিরুদ্ধে নারীনির্যাতন, অর্থআদায় ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ

এসআই এর বিরুদ্ধে নারীনির্যাতন, অর্থআদায় ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ

দৈনিক সচেতন বার্তার অপরাধ বিষয়ক অনুসন্ধানী টিম ‘সচেতন চোখ’ এর  অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-১

রাজধানীর মিরপুরে রুপনগর থানার এসআই মাসুদুর রহমানসহ তার তিন সহোযোগীর বিরুদ্ধে জনৈক নারীকে নির্যাতন ও ব্ল্যাকমেইল করে নগদ অর্থ, স্বর্নালঙ্কার আদায় এবং ওই নারীর স্বামীর বিরুদ্ধে মাদকের মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

গত ২৫শে ফেব্রুয়ারী তারিখ দুপুরে মিরপুর ৬ নং সেকশানের ‘ট’ ব্লকে  ওই নারীর ভাড়াকৃত ১৩/১৪  নাম্বার বাসায় অভিযুক্তরা এই ঘটনা ঘটায়।

ভুক্তভোগী নারী এ বিষয়ে গত ৩১/০৩/২০২১ তারিখে বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ছাড়াও কয়েকটি সংস্থা বরাবর অভিযুক্ত এসআই মাসুদুর রহমানসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগকারীনি মহিলা তার স্বামীকে নিয়ে ঢাকার মিরপুর সেকশনঃ ৬, ব্লকঃ ট, রোডঃ ২ এর বাড়ীঃ ১৩/১৪ (নিচতলা) থানাঃ রূপনগর এর ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। গত ২৫/২/২১ ইং তারিখ বেলা আনুমানিক দুপুর ১ টার দিকে ওই নারীর বাসার দরজায় আওয়াজ শুনে দরজা খুললে দুজন ব্যক্তিকে দেখতে পান। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আড়ালে থাকা অপর দুইজন ব্যাক্তি তাকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে তার বাড়ীতে প্রবেশ করে। যার একজন রুপনগর থানার এস আই মাসুদুর রহমান ও তার সঙ্গীয় কন্সটেবল জীবন কৃষ্ণ ও অপর দুইজন রুপনগর থানা পুলিশের সোর্স রনি ও সোহাগ। তারা সেসময় ওই নারীর স্বামী মোঃ রানার নাম ধরে অকথ্য, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে খুজতে থাকে। কয়েকদিন আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে সে সময় তার স্বামী বাড়ীতেই চিকিৎসাধীন ছিল। ঘটনার সময় তার অসুস্থ স্বামী ঘরে বিছানায় শুয়ে ছিল।

অভিযোগে তিনি বলেন, তার বাড়িতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে উক্ত ব্যক্তিরা তার স্বামীর ঘরে ঢুকে। তার ও তার স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল সেটগুলো নিয়ে নেয় এবং তার স্বামীকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে মারতে গালিগালাজ করতে থাকেন।

এসময় সে তার স্বামীকে মারধর এর প্রতিবাদ করতে গেলে উক্ত চার জন ব্যাক্তির মধ্যে একজন ব্যক্তি তার পরনের শার্ট খুলতে খুলতে ওই নারীকে বলে ‘চিনিস আমি দারোগা ।’ শার্টের নিচে পুলিশের পোশাক পরিধান করা ছিল। এক পর্যায়ে তিনি চিৎকার দিয়ে আশেপাশের লোকজনের সাহায্যের চেষ্টা করলে পুলিশের পোশাক পরিহিত দারোগা পরিচয়দানকারী এসআই মাসুদুর রহমান তখন ওই নারীর মুখ চেপে ধরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বলে ‘চিৎকার করলে প্রানে মেরে ফেলবো।’ তখন প্রাণভয়ে সে চুপ থাকে। এ সময় সেই এসআই তার পকেট থেকে কিছু একটা বের করে তার স্বামীকে দেখিয়ে বলে “এটা দিয়ে তোকে লাল দালানে পাঠাবো।’

এসআই মাসুদুর রহমান সহ তার সঙ্গীয় অপর  ব্যক্তিরা ওই নারী ও তার স্বামী মোঃ রানাকে থানায় নিয়ে যাবার কথা বলাবলি করার সময় এসআই মাসুদ ওই নারীকে বলে, এক লক্ষ টাকা দিলে শুধু তার স্বামীকে থানায় নিয়ে যাবে আর রাতের মধ্যে আরও দেড় লক্ষ টাকা জোগাড় করে দিলে তার স্বামীকেও থানা থেকে ছেড়ে দিবে বলে জানায়।

দাবি শুনে দিশেহারা হয়ে তিনি ঘরে থাকা ২৫ হাজার টাকা উক্ত দারোগার হাতে দিয়ে আর টাকা নাই বলে অনুনয়-বিনয় করলেও এসআই  কিছুতেই রাজি না হয়ে তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন টা দিয়ে দিতে বলে।

তিনি তখন উক্ত দারোগাকে চেইন দেওয়ার সম্মতি  দিয়ে তার স্বামীকে থানায় না নেওয়ার অনুরোধ করলে  তাতেও সম্মত হয়নি সেই এসআই। ঘটনার এক পর্যায়ে তার গলায় থাকা ১ ভরি ৩ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ও ২৫ হাজার টাকা নিয়ে তার স্বামীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় আবারো তাকে বলে যে রাতের মধ্যে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা জোগাড় করে দিলে তার স্বামীকে ছেড়ে দিবে। এমন অবস্থায় তিনি দিশেহারা হয়ে ঘটনাটি মোবাইলে তার  শ্বশুরকে জানায়। এসআই মাসুদের সাথে থাকা ব্যাক্তিরা দুপুর থেকে রাত দুইটা পযন্ত টাকার জন্যে অসংখ্যবার তাকে মোবাইল করে।

ভূক্তভোগী নারী অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, কিছুদিন আগে তার স্বামী (মোঃ রানা) বাইক চালিয়ে আসার সময় পথে কোন এক দারোগার সাথে তার তর্কাতর্কি হয়েছিল। সেসময় সেই দারোগা তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল যা সেদিন তার স্বামী বাসায় এসে তাকে জানিয়েছিল। তিনি এ ঘটনার বিষয়ে তার স্বামীকে থানায় জিডি করার কথা বললেও তার স্বামী বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। থানার লকআপে থাকাকালীন সময় তার স্বামীকে তিনি খাবার দিতে গেলে সেসময় তার স্বামী তাকে জানায়, দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া সেই দারোগায় হচ্ছে এই এসআই মাসুদুর রহমান।

ঘটনার দিনে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তিনি একাধিকবার থানায় গিয়ে উক্ত দারোগার সাথে কথা বলেন, তার স্বামীকে খাবার দিয়ে আসে্ন। থানায় তার সাথে তার ভাগ্নে জীবন ও  ছোট ভাইকেও নিয়ে যান।  থানায় যাতায়াতের পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন তার বাড়িতে অবৈধভাবে প্রবেশকারী দারোগা পরিচয়দানকারী ব্যক্তি রূপনগর থানার এসআই মাসুদুর রহমান অপর একজন কনস্টেবল জীবন এবং অন্য দুই জন ব্যক্তি রনি ও সোহাগ ছিলেন, যারা রুপনগর থানায় দালাল/সোর্স হিসাবে কাজ করে্ন।

তিনি তার স্বামীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে শ্বশুর ও এক নিকটাত্মীয়ের নিকট থেকে নিয়ে এক লক্ষ টাকা তার ভাগ্নে জীবনকে দিয়ে থানায় এস আই মাসুদুর রহমানের কাছে পাঠা্ন। এসআই মাসুদুর রহমান থানা ভবনের দোতালার একটি কক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত রূপনগর থানার দালাল রনি, সোহাগ ও আরও একজন ব্যাক্তির  উপস্থিতিতে  এসআই মাসুদকে এক লক্ষ টাকা দেয়। তখন এসআই মাসুদুর রহমান ওই নারীর ভাগ্নে জীবনের কাছে আরো ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বললে তার ভাগ্নে জীবন তখনই ওই নারীকে মোবাইলে ফোন করে বিষয়টি জানায়। সে সময় জীবন ছাড়াও ঘটনার সাথে জড়িত দালালেরাও জীবনের মোবাইল থেকে নারীর সাথে কথা বলেন। সেই কথোপকথনের রেকর্ডও ভূক্তভোগী নারীর কাছে আছে বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।

সেসময় তিনি মোবাইলে  জানিয়েছিলেন যে অবশিষ্ট টাকা সকালের মধ্যে ব্যবস্থা করে দিবেন। সেই মোতাবেক পরদিন সকালে ২৬ শে ফেব্রুয়ারী অবশিষ্ট টাকা দেওয়ার জন্য এসআই মাসুদুর রহমানের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করা থেকে বিরত থাকেন। তখন তিনি তার ভাগ্নে জীবনকে দিয়ে বাকী ৫০ হাজার টাকা থানায় পাঠান। তার স্বামীর অবস্থাও জানতে বলেন ভাগ্নে জীবনকে।

জীবন থানায় গিয়ে এস আই মাসুদুর রহমান কে না পেয়ে তার মোবাইলে ফোন দিতে থাকলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।  জীবন থানায় এসে জানতে পারেন তার মামা রানাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।

সেই দিন বেলা আনুমানিক ১১ টার দিকে এস আই মাসুদ ভূক্তভোগী নারীর ভাগ্নে জীবনকে ফোন করেন। জীবন জানতে চায়, দাবি মোতাবেক টাকা দেওয়া সত্ত্বেও  মামার বিরুদ্ধে মাদক মামলা দিয়েছেন কেন? এসআই মাসুদ জানায়, তিনি থানায় এসে বিষয়টি দেখছেন।

ঘটনার স্বীকার ভূক্তভোগী নারী পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর দায়েরকরা অভিযোগে আরও বলেন, ‘এহেন সুচতুর অর্থলোভী, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, নৈতিকতা বিবর্জিত নারী নির্যাতনকারী এসআই মাসুদুর রহমানের অমানবিক কর্মের ও দায়েরকৃত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলার ঘটনায় এস আই মাসুদুর  রহমান সহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাকে নায্য বিচার দানে ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে কৃপা হয়’।

এর আগে ঘটনা ঘটার পর পরই এসআই মাসুদুর রহমানের অনৈতিকতার বিষয়ে দৈনিক সচেতন বার্তার অপরাধ বিষয়ক অনুসন্ধানী টিম সচেতন চোখ জানতে পেরে লাঞ্ছনার স্বীকার ওই নারীর কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৫শে ফেব্রুয়ারী দুপুর ১টার দিকে দরজা নকের আওয়াজ শুনে তিনি জানতে চান কে? সে সময় বলে ভাড়াটিয়া বাসা দেখতে এসেছি। তিনি দরজা খুলে রনি ও সোহাগ নামের দুই জন ইনফরমার কে দেখেন। তৎক্ষণাৎ আরও দুই জন ব্যাক্তি তাকে ধাক্কা মেরে তার বাসায় ঢুকে এবং বলে যে আমরা প্রশাসনের লোক। তিনি আরও জানান অপর ওই দুই জন ব্যাক্তি রুপনগর থানার এসআই মাসুদুর রহমান ও কন্সটেবল জীবন কৃষ্ণ ছিলেন। পুলিশের ওই সদস্যরা সিভিল ড্রেসে ছিল, ড্রেসের উপর আলাদা কাপড় পরা ছিল।

তিনি আরও জানান, আগে কন্টাক্ট করছে, বলছে তোমরা আসো, আমাকে বাসাতেই ছেড়ে দিয়ে বলছে ‘দোনো জোনরে নিয়্যা তো লাভ নাই,  তুমি টাকা পয়সা ভাও কইরা নিয়া আসো তোমার জামাইরে ছেড়ে দেব’। তিনি বলেন, এসআই মাসুদ তাকে প্রথমে ৫ লাখ টাকার কথা বলেন। তিনি এস আইকে বলেন এতো টাকা কোথায় পাবো।  তখন এস আই মাসুদ তাকে বলেন,  ‘ঠিক আছে, আমি ওসি  স্যারের সাথে কথা বইলা তোমারে জানাইতেছি’।

প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে দৈনিক সচেতন বার্তার অপরাধ বিষয়ক অনুসন্ধানী টিম ‘সচেতন চোখ’ ঘটনার বিষয়ে জানতে প্রথমেই ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের রুপনগর থানায় যায়। রুপনগর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি)  আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা হয়। তিনি মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, মোঃ রানাকে তার অফিসার মাদক বিক্রয়কালীন সময়ে হাতেনাতে আটক করায় তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ  আইনের ৩৬(১) এর ১০ (ক) মোতাবেক আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এরপরই সচেতন চোখের টিম সমন্বয়ক ও প্রতিবেদক, ওই মামলার এজাহার দায়েরকারী ডিএমপি’র  রূপনগর থানার অভিযুক্ত এসআই মাসুদুর রহমান কে মোবাইলে নিজ পরিচয় দিয়ে তার একটি মামলার বিষয়ে তথ্য জানতে চান।

  প্রতিবেদকের সাথে অভিযুক্ত এসআই মাসুদূর রহমান এর কথোপকথন হুবহু তুলে ধরা হলো

প্রতিবেদকঃ  আপনি কি সাব ইন্সপেক্টর মাসুদ সাহেব বলছিলেন?

এসআইঃ জি জি

প্রতিবেদকঃ (নিজের পরিচয় দিয়ে) আপনার একটা মামলার বিষয়ে কিছু তথ্য নিবো।

এসআইঃ আচ্ছা আছা বলেন।

প্রতিবেদকঃ গত ২৫ তারিখ সেকশান ৬ এর ‘ট’ ব্লকের ২ নম্বর লাইনের বাসা নাম্বার ১৩/১৪ এর নীচতলায় অভিযান চালিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে ধরেছিলেন, তথ্য সঠিক?

এসআইঃ হ্যাঁ বলেন।

প্রতিবেদকঃ তথ্যটা কি সঠিক? আমি আপনাকেই বলছি।

এসআইঃ সঠিক। কিছুটা সঠিক।

প্রতিবেদকঃ কিছুটা সঠিক?

এসআইঃ হ্যাঁ।

প্রতিবেদকঃ ভূল যেটুকু সেটুকু দয়াকরে বলবেন।

এসআইঃ (এড়িয়ে গিয়ে) আপনার বাসা কোথায়?

প্রতিবেদকঃ আমার বাসা রাজশাহী। (এস আই কে জন্মস্থান টা জানান)

এসআইঃ রাজশাহী? আপনি ক্রাইম জার্নালিষ্ট? আপনি কি সারাদেশের সবকিছুই আপনি রিপোর্ট করেন?

প্রতিবেদকঃ আপনি প্রশ্নগুলো আগেই করতে পারতেন। আমি ঢাকা মিরপুরে থাকি।

এসআইঃ আপনি একটু কাইন্ডলি কোন ইনফরমেশন, তথ্য প্রয়োজন থাকে আপনি দয়া করে আমাদের রুপনগর থানায় আইসেন।

প্রতিবেদকঃ আপনাকে আগেই জানিয়েছি, আমি আপনাদের রুপনগর থানায় গেছি, ওসি সাহেবের সাথে কথা বলে আপনার দায়ের করা এই মামলার তথ্য নিয়েছি। আপনার সাথে কথা বলছি পেশাগত কারনেই। আপনি কি তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন?

এসআইঃ অস্বীকৃতি না, আপনি ক্রাইম জার্নালিষ্ট যে, এটা তো আমার জানা প্রয়োজন আছে না।

প্রতিবেদকঃ আপনাকে আগেই জানিয়েছি, আপনার ওসির সাথে গতকাল সাক্ষাত করেই আপনার এই মামলার তথ্য নেওয়া হয়েছে। আপনি চাইলে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়েও আমার সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জানতে পারবেন।

এসআইঃ হু হু।

প্রতিবেদকঃ আপনি বলেন, কোন তথ্যটা আপনি অসঠিক বলছেন? আংশিক সঠিক বললেন। আংশিক ভুলটা কোথায়?

এসআইঃ আপনি আবার বলেন। প্রথম থেকে কি কি বলতেছিলেন, আবার বলেন।

প্রতিবেদকঃ আমি বলছিলাম গত ২৫ তারিখ আপনার থানাধীন ব্লক ‘ট’ এর ২ নাম্বার লেনে ১৬/৩ এর বাসায় রেট দেন এবং ২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন। তথ্যটি সঠিক?

(অভিযুক্ত এস আই পূনরায় প্রথম থেকে জিজ্ঞেস করতে বললে, তাকে প্রশ্ন করার সময় বাসা নাম্বারটা পাল্টিয়ে তার মিথ্যা এজাহারে উল্লেখিত স্থানের বাসা নাম্বার উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয়।)

এসআইঃ দুইজন না একজন।

প্রতিবেদকঃ একজনকে আটক করেছিলেন, আচ্ছা

এসআইঃ সেটা হলো যে বাসার বাইরে তার কাছে মাদক পাওয়ার পরে তার বাসায় তল্লাশি করা হয়েছিলো যে আরো কিছু আছে কিনা।

প্রতিবেদকঃ তল্লাশিতে সে বাসায় মাদক বা কিছু পেয়েছিলেন?

এসআইঃ (আবারো প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে পাল্টা প্রশ্ন) আপনার নামটা যেন কি বললেন?

প্রতিবেদকঃ আমি আপনাকে আমার নাম একবার নয়, একাধিকবার বলেছি। বলেছি আপনার থানায় কার্ড দেওয়া আছে…।

এসআইঃ ( প্রতিবেদক কথা শেষ না করতেই) আচ্ছা ওসি স্যারের সাথে কথা বলি, আপনার কার্ডটা আমি দেখি, তারপরে আপনাকে কল ব্যাক করতেছি। আমি থানায় আছি এখন।

প্রতিবেদকঃ ঠিক আছে, ওকে।

৩রা মার্চ বিকেল ৪ টা ২৪ মিনিটের সময় এসআই মাসুদুর রহমানকে ফোন দেওয়া হয়। ৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ড কথা হয়। ফোনব্যাক করার কথা বলে ৪ টা ২৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের সময় তিনি কল কাটেন। এরপর তিনি আর ফোনব্যাক না করলেও ওইদিন রাত ১১ টা ১৭ মিনিটে্র সময় মিরপুর ১০নম্বরের জনৈক মানবাধিকার কর্মীকে দিয়ে তদবীরের ফোন করিয়েছিলেন প্রতিবেদক এর কাছে।

পরবর্তীতে একাধিক বার অভিযুক্ত এস আই  মাসুদুর রহমান কে ফোন দেওয়া হয়। দু’একবার ফোন রিসিভ করলেও ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে পরে ফোন দেওয়ার কথা বলেন। পরবর্তীতে ফোন না দিয়ে প্রতিবেদককে তার মোবাইল থেকে টেক্সট ম্যাসেজ করেন। এসআইয়ের সাথে প্রতিবেদকের একাধিক টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদান হয়। প্রতিবেদক এর দৃড় অবস্থানের বিষয় জেনে তিনি এক পর্যায়ে  প্রতিবেদককে কটাক্ষ করে ও মেসেজ করেন। 

ইতিমধ্যে সচেতন বার্তার হাতে অডিও কল রেকর্ডিংসহ তথ্য প্রমাণ এসেছে।

অভিযুক্ত এসআই এর সাথে প্রতিবেদকের আদান-প্রদান হওয়া মেসেজগুলোর স্কিনশট দেওয়া হলো। 

সচেতন চোখ এর অনুসন্ধানী রিপোর্ট-২ আসছে আগামীকাল……। থাকুন সচেতন বার্তার সাথেই।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments