কোভিড রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে ১৪ হাজার নার্সদের মধ্যে তিন হাজারের বেশি নার্স আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ২৫ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এদিকে, ২২টি হাসপাতালের ২ হাজার ৫৭২ জনের প্রণোদনা মঞ্জুর হয়েছে। নার্সদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও প্রণোদনা নিশ্চিত হলে কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য প্রাণ। নতুন নতুন রূপে শক্তি সঞ্চয় করে সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়াচ্ছে ক্ষুদ্র ভাইরাসটি।
বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, করোনা রোগীদের সেবায় সরাসরি নিয়োজিত ১৪ হাজারের বেশি নার্স। তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজারের বেশি। মৃত্যু তালিকায় ২৫ জন। সরকারের প্রণোদনা তালিকায় ১৩ হাজার ৪৭২ নার্স; ইতোমধ্যে ২২টি হাসপাতালের ২ হাজার ৫৭২ জনের প্রণোদনা মঞ্জুর হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবসময়ই বেশি। সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে সাতশ’রও বেশি নার্স। মারা গেছেন ৬ জন। মৃত্যু ভয় আর সংক্রমণ ঝুঁকির তোয়াক্কা না করেই রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের ডিএমসি শাখা সভাপতি মো. কামাল হোসেন পাটোয়ারি জানান, নার্সরা এখন করোনা ইউনিটে কাজ করতে চান, রোগীদের সেবা করতে চান। কিন্তু করোনা শুরুর সময় নার্সরা ভয় পেয়েছিল, এখন তারা সেই কাজ করতে ভয় পায় না।
সেবা দিতে গিয়ে কোভিডে মারা যাওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার শাহিদা আক্তার ক্ষতিপূরণ বাবদ পেয়েছেন ৩৭ লাখের বেশি টাকা।
মো. কামাল হোসেন পাটোয়ারি আরও জানান, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ৩ জন অফিস সহায়ক এবং একজন অফিস সহকারী মৃত্যুবরণ করলে যে প্রণোদনা পাওয়ার কথা তারা পেয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, দুই মাসের সমপরিমাণের যে প্রণোদনা এটা অনুমোদন হয়ে চলে আসছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা আমরা দেয়া শুরু করবো। যেভাবে তারা জীবন বাজি রেখে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন- এটা আমাদের বুঝতে হবে, মূল্যায়ন করতে হবে। সবার ক্ষতিপূরণ ও প্রণোদনা নিশ্চিত করা জরুরি বলছেন হাসপাতাল পরিচালক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দায়িত্ব পালনে নার্সদের আরও উজ্জীবিত করতে প্রয়োজন ইতিবাচক সমালোচনা ও কাজের মূল্যায়ন।