পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের প্রকাশিত নিবন্ধে (আর্টিকেল) চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আওয়াল কবির ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইয়াহিয়া বেপারী।
অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম রোস্তম আলী গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আওয়াল কবির ও ইয়াহিয়া বেপারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শিক্ষাবিষয়ক একটি জার্নালে সম্প্রতি বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে একটি আর্টিকেল লেখেন। এরপর মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রকিব চৌধুরী ও মাহবুব রহমান অভিযোগ করেন, ওই আর্টিকেলে শিক্ষা বিষয়ে তাঁদের লেখা আগে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলের বেশির ভাগ অংশই চুরি করা হয়েছে।
এরপর তাঁরা বিষয়টি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ও পরিবেশ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক এম শামীম কায়সার।
কমিটি অভিযোগের বিষয়ে যাচাই করবে এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে এ বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কী ধরনের শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তার আলোকে সুপারিশ করবে। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকদের একজন মো. ইয়াহিয়া বেপারী অভিযোগের বিষয়ে বলেন, তিনি ওই আর্টিকেলের সহলেখক। মূল লেখক আওয়াল কবির। তিনি শুধু আর্টিকেলের গ্রামাটিক্যাল ও মেথডোলজি বিষয়টি দেখেছেন। তারপরও অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁদের প্রকাশিত আর্টিকেলটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষকদের কাছে দুঃখও প্রকাশ করেছেন।
গত রোববার ইউজিসির এক সভায় গবেষণাপত্রে চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে শিগগির টার্নিটিন সফটওয়্যার কেনার সিদ্ধান্ত হয়। প্রাথমিকভাবে ৩০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই সফটওয়্যারের সেবা সরবরাহ করা হবে।
পর্যায়ক্রমে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এর ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে গবেষণার স্বত্ব সংরক্ষণ ও মৌলিকত্ব নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে মনে করছে ইউজিসি।