fbpx
শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
বাড়িজাতীয়অর্থনীতিপ্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পন্যের দাম বাড়তে ও কমতে পারে

প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পন্যের দাম বাড়তে ও কমতে পারে

২০২১-২০২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু পণ্যের শুল্ক-করহার বাড়ানো হয়েছে। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।  অন্যদিকে কিছু পন্যের শুল্ক-করহার কমানো হয়েছে। এতে এসব পন্যের দাম বাড়তে পারে। 

যেসব পণ্যে শুল্ক-করহার বাড়ানোর ফলে দাম বাড়তে পারে সেগুলো:

মুঠোফোন

বাজেটে মুঠোফোন (সেলুলার ফোন) আমদানিতে আমদানি শুল্ক ১০ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে বিদেশি মুঠোফোনের দাম আরও বাড়তে পারে।

বিদেশি মাংস

মাংস আমদানিতে শুল্কহার বাড়ানো হয়েছে। বসানো হয়েছে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট। আবার ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বিদেশি মাংসের দাম বাড়বে। দেশীয় খামারিদের সুরক্ষা দিতে কাজটি করেছে সরকার।

মাশরুম

বিদেশি মাশরুমের দাম অনেকটাই বাড়তে পারে। এই মাশরুম আমদানিতে আমদানি শুল্ক ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি মাশরুম আমদানিতে ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য আরোপের কথা বলা হয়েছে।

বিদেশি গাজর-টমেটো

চাষিদের সুরক্ষা দিতে গাজর, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, টমেটো ও কমলা আমদানিতে ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য আরোপের কথা বলা হয়েছে। এতে এসব পণ্য আমদানিতে কম দাম দেখিয়ে শুল্ক ফাঁকি দেওয়া যাবে না। দাম বাড়তে পারে। গাজরের ওপর ভ্যাটও আরোপ করা হয়েছে।

শিল্প লবণ

শিল্প লবণের ওপর কর বাড়ানো হয়েছে। এতদিন শিল্প লবণের নামে ভোজ্য লবণ আমদানি হত। এখন দুই লবণের করহারের সমন্বয় করা হয়েছে।

বিদেশি সাবান

সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দাম বাড়তে পারে।

চুইংগাম

এর ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে দাম বাড়বে।

বিদেশি বিস্কুট

বিস্কুট ও সমজাতীয় সুগার কনফেকশনারির ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে দাম অনেকটাই বাড়তে পারে।

বিদেশি রড ও সমজাতীয় পণ্য

আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে দাম বাড়তে পারে। অবশ্য রডের বাজার মূলত দেশীয় কোম্পানির দখলে।

যেসব পণ্যে করহার কমানোর ফলে দাম কমতে পারে সেগুলো:

স্যানিটারি ন্যাপকিন

দাম কমতে পারে স্যানিটারি ন্যাপকিনের। কারণ ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশে উৎপাদিত ন্যাপকিনের সমুদয় মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কাঁচামাল আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে।

করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট

সুরক্ষা সামগ্রীতে শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা আগেই ছিল। এবার করোনা শনাক্তের আরটি-পিসিআর কিট তৈরির কাঁচামাল আমদানিতেও শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে।

শৌচাগারের প্যান

গ্রামের মানুষের স্যানিটেশন সুবিধা বাড়াতে দেশে উৎপাদিত লং প্যানের সম্পূরক শুল্ক তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ছিল।

অটিজম সেবা

অটিজম সেবার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মেডিটেশন সেবার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি এক বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে।

ইস্পাত

ইস্পাতের ওপর সুনির্দিষ্ট শুল্ক টনপ্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।

মুরগি বা মাছের খাবার

উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে মুরগি, মাছ ও গবাদিপশুর খাবারের দাম কমানোর সুযোগ তৈরি হবে।

ক্যানসারের ওষুধ

ক্যানসারের ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালে আবার শুল্ক ছাড় দিয়েছে সরকার। এতে ক্যানসারের ওষুধ উৎপাদনে ব্যয় কমবে। এছাড়া ওষুধ শিল্পের আরও কিছু কাঁচামালে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে।

মেডিকেল ডিভাইস

বেশকিছু মেডিকেল যন্ত্রাংশ উৎপাদনে উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

দেশি এলপিজি সিলিন্ডার

দেশে এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

দেশি খেলনা

দেশে খেলনা উৎপাদনে উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দিয়েছে সরকার।

ডায়ালাইসিসের টিউব

ডায়ালাইসিস সেবায় ব্যবহার করা ব্লাড টিউবিং সেটের কর কমানো হয়েছে।

রড ও সিমেন্ট

দেশে তৈরি রডসহ লৌহজাত পণ্য ও সিমেন্টের দাম কমবে। এসব পণ্যের উৎসে কর কর্তনের হার ৩ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া সিমেন্ট আমদানিতে করহার ৩ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। লৌহজাত পণ্যের কিছু কাঁচামালে আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সস

গৃহস্থলী কাজে দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য ব্লেন্ডার, জুসার, মিপার, গ্রাইন্ডার, ইলেক্ট্রিক কেটলি, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেক্ট্রিক ওভেন উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

খাদ্যপণ্য

তাজা ফলের ব্যবসায়ী পর্যায়ে এবং মুড়ি স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

দেশে তৈরি কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও যন্ত্রাংশ

প্রিন্টার, কার্টিজসহ কম্পিউটার প্রিন্টারের যন্ত্রাংশ, কম্পিউটার, ল্যাপটব, ডেস্কটপ, নোটবুক, নেটপ্যাড, ট্যাব, সার্ভার, কিবোর্ড, মাউস, স্কানার, র‌্যাম, পাওয়ার ব্যাংক, রাউটার, মডেম, স্পিকার, হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ, পেনড্রাইভ, ইয়ারফোন, মেমোরি কার্ড, সিসিটিভি, মনিটর, প্রজেক্টর, ডাটা ক্যাবল, ডিজিটাল ওয়াচের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। ক্যাবল ও ইন্টারনেট ক্যাবল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে কাঁচামাল আমদনিতে শুল্ক কামানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। দেশে এলইডি লাইট উৎপাদনে যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক কমাবে।

কৃষি যন্ত্রপাতি

কৃষিখাতের আধুনিকায়নে কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভ্যাট অব্যবহতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে নিড়ানি ও ঝাড়াইকল উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি এবং থ্রেসার মেশিন, পাওয়ার রিপার, পাওয়ার ও রোটারি টিলার, অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হারভেস্টর নিড়ানি ও ঝাড়াইকল আমদানি পর্যায়ে আগাম কর অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

মাইক্রোবাস ও মপেড

নসিমন, লেগুনার মতো দুর্ঘটনাপ্রবণ যানবাহন ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে বিকল্প গণপরিবহন হিসেবে মাইক্রোবাস ব্যবহারে উৎসাহিত করা হবে। এ জন্য মাইক্রোবাস আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়। একইসঙ্গে পরিবেশবান্ধব হাইব্রিড গাড়ি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের জন্য জ্বালানি সাশ্রয়ী মোটরসাইকেল মপেড-এর সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

অন্যান্য

জিপসাম বোর্ড ও পার্টিকেল বোর্ড উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমতে পারে। দেশে তৈরি লুব ব্লেডিং কাঁচামালেও শুল্ক কমানোর প্রস্তাবে দাম কমতে পারে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments