ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহসিনা আক্তার খানমের (লীনা তাপসী খান) বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) সাবেক মহাপরিচালক ও সংগীতশিল্পী ইফফাত আরা নার্গিস।
এসময় অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষে লীনা তাপসী খানের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল, ডিগ্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি, গ্রন্থটি বাতিল এবং গ্রন্থের জন্য প্রাপ্ত লীনা তাপসী খানের নজরুল পদক প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সংগীতের প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে আমি লীনা তাপসী খানের ‘নজরুল-সংগীতে রাগের ব্যবহার’ নামে গ্রন্থটি সংগ্রহ করি। কিন্তু গ্রন্থটি পাঠ করে আমার এর আগে পাঠ করা ৩/৪টি গ্রন্থের সঙ্গে বেশ কিছু অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাই, যা সম্পূর্ণ চৌর্যবৃত্তি।
তিনি জানান, এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি লীনা তাপসী খানের পিএইচডি-অভিসন্দর্ভের ওপর ভিত্তি করে রচিত গ্রন্থ ‘নজরুল সংগীতে রাগের ব্যবহার’ সম্পর্কে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ তদন্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তাতেও কোনো ফল মেলেনি।
চৌর্যবৃত্তি বর্ণনা দিয়ে নায়েমের সাবেক এ মহাপরিচালক বলেন, গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ে ৪২ লাইন, তৃতীয় অধ্যায়ে ৭ লাইন, চতুর্থ অধ্যায়ে ২৬ লাইন, পঞ্চম অধ্যায়ে ৬ লাইন, ষষ্ঠ অধ্যায়ে এক লাইন, দশম অধ্যায়ে ১২৬ লাইন, একাদশ অধ্যায়ে ১২২ লাইন, ত্রয়োদশ অধ্যায়ে ৬৫ লাইন এবং চতুর্দশ অধ্যায়ে ৫৩ লাইনে রবীন্দ্রনাথের ‘গীতিবিতান’ ও ‘নজরুল-গীতিকা, ইদ্রিস আলীর লেখা ‘নজরুল সঙ্গীতের সুর’, স্বরলিপিকার জগত ঘটক ও কাজী অনিরুদ্ধের ‘নবরাগ’, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘নজরুল সৃষ্ট রাগ ও বন্দিশ’ এবং কাকলী সেনের ‘ফৈয়াজী আলোকে নজরুলগীতি’ প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে তথ্য নির্দেশ ছাড়া হুবহু চুরি করা হয়েছে।
এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। কাউকে কাউকে শাস্তিও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।