শাকিলকে গুলি করার সময় পাশে থাকা আসমার ছেলে রবিন দৌঁড়ে পাশের একটি মসজিদের দিকে যেতে থাকে। সৌমেন তাকে ধরে এনে গুলি করলে শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
কুষ্টিয়ায় দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে গুলি করে এক নারী ও শিশুসহ তিন জনকে হত্যার ঘটনায় হতবাক জেলা সদরের মানুষ। সর্বত্রই চলছে গুঞ্জন, বর্বর এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কী তা জানার চেষ্টা করছেন সাধারণ মানুষ অনেকে।
আটকের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন জানিয়েছেন, নিহত নারী আসমা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার প্রথম স্ত্রী এবং সন্তান অন্যত্র থাকেন। কেন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এমন প্রশ্নে সৌমেন জানিয়েছেন, বিকাশ কর্মী শাকিলের সঙ্গে আসমার অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে আসমাকে নিজের স্ত্রী দাবি করলেও কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি সৌমেন। গুলিতে নিহত শিশুটি আসমার প্রথম ঘরের সন্তান।
আসমার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বছর দেড়েক আগে ডিভোর্স হয়। এরপর তিনি কুষ্টিয়া শহরে ছেলেকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকতেন। এসময় সৌমেন রায় কুষ্টিয়ার হালসা পুলিশ কেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলেন। সেসময় তার বিরুদ্ধে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে। হালসায় থাকা অবস্থায় আসমার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে সৌমেনের। তবে দুই জন দুই ধর্মের হওয়ায় তাদের বিয়ে হয়েছে কিনা তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
নানা অভিযোগের কারণে সৌমেনকে হালসা থেকে খুলনার ফুলতলায় বদলি করা হয়। এ সময় থেকে আসমার সঙ্গে শাকিলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে আলোচনা রয়েছে। রোববার বেলা ১১টার পর শহরের পিটিআই সড়কের কাস্টমস মোড়ে আসমা, তার ছয় বছরের ছেলে রবিন ও শাকিল নামের আরেক যুবককে গুলি করে হত্যা করে এএসআই সৌমেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে আসমা তার সন্তানকে নিয়ে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কাস্টমস মোড়ে তিনতলা একটি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে বিকাশ এজেন্ট শাকিলও সেখানে যান। এক পর্যায়ে এএসআই সৌমেন সেখানে হাজির হন। তিন জনের কথা বলার এক পর্যায়ে সৌমেন আসমার মাথায় পিস্তল দিয়ে গুলি করেন। পরে শাকিলকে গুলি করার সময় পাশে থাকা আসমার ছেলে রবিন দৌঁড়ে পাশের একটি মসজিদের দিকে যেতে থাকে। সৌমেন তাকে ধরে এনে গুলি করলে শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
পরে সেখানে উপস্থিত জনতা সৌমেনকে আটক করতে ধাওয়া করে। তখন তিনি পাশের মার্কেটের উপরে উঠে যান। সেখানে জনতা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।