রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় জিনের সাহায্যে পুরো পরিবারকে বড়লোক বানানোর প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে নবম ও দশম শ্রেণিপড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণকারী সেই ভণ্ডসাধু সবুর প্রামাণিককে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ জুন) রাত ১১টার দিকে উপজেলার কলিমোহর ইউনিয়নের প্রাণপুরের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত সবুর একই গ্রামের মৃত ভোলা প্রামাণিকের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাংশা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, গত ১৫ জুন ভুক্তভোগী ৯ম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা ও অপর ভুক্তভোগী ১০ম শ্রেণির ছাত্রীর বোন রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে (সংশোধনী-২০০৩ এর) ৯ (১) ধারায় পৃথকভাবে দুটি মামলা করেন। আদালত রাজবাড়ীর পাংশা মডেল থানার ওসিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। পরে শনিবার রাত ১১টার দিকে অভিযুক্ত সবুর প্রামাণিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি বলেন, অভিযুক্ত ভণ্ডসাধু সবুর প্রামাণিকের নিজ বাড়ি কলিমোহর ইউনিয়নের প্রাণপুর থেকে শনিবার রাত ১১টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন দশম ও ১০ জুন দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে জিনের ভয় দেখিয়ে পরিবারের লোকজনকে বড়লোক বানানোর আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করে ভণ্ডসাধু সবুর প্রামাণিক।
ভুক্তভোগী নবম শ্রেণির ছাত্রী বলে, কথিত সাধু সবুর আমাকেসহ আমাদের পরিবারের সদস্যদের জিন ও পরীর ভয় দেখান। গত মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুর তার বাবাকে বলেন, এক গ্লাস পানি নিয়ে আমাকে বাড়ির পাশে থাকা একটি তালগাছের নিচে যেতে। আমি সেখানে গেলে নানা ধরনের কথা বলে এবং সে জোর করে আমার হাত বেঁধে ফেলে।
সে আরো বলে, আমি চিৎকার দিতে গেলে সে আমাকে ভয় দেখায়। জিন নাকি আমার বাবাকে মেরে ফেলবে এবং এ কথা কাউকে বললে আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে। তাকে টানা ৪১ দিন জিনের ইচ্ছা পূরণ করতে হবে। এতেই নাকি আমাদের ভাগ্যর পরিবর্তন হয়ে যাবে। এসব কথা বলে তাকে দুবার ধর্ষণ করে।
অপর ভুক্তভোগী দশম শ্রেণির ছাত্রী বলে, আমি বেশ কিছুদিন ধরে আমার বোনের বাড়িতে অবস্থান করছি। ওই বাড়িতে লম্পট সবুর আসে। সে তার বোন ও দুলাভাইকে বড়লোক করে দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। একই সঙ্গে তাকে (ওই ছাত্রীকে) সবুর তার নিজ বাড়িতে কথিত জিনের আসর বসানোর কথা বলে। আর এই আসর না বসালে বড় রকমের ক্ষতি হবে বলে ভয় দেখায়।
সে আরো বলে, গত মে মাসের শেষ দিকে একদিন রাতে সবুরের বাড়িতে কথিত জিনের আসরে আমাকে নেয় সবুর। প্রথমে আমাকে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে বলে। আমি নামাজ শেষ করতেই সে ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়। এরপর সাধু সবুর একটি কালো রঙের জুব্বা পরে আমার সামনে আসে। সে তখন আমাকে বলে, আমি এখন জিন সবুরের রূপে তোমার কাছে আসছি। আমার ইচ্ছা পূরণ করতে হবে। এরপর একই ধরণের ভয় দেখিয়ে আমাকে চারবার ধর্ষণ করে। পরে আমি বিষয়টি আমার বোনকে জানাই।