করোনা সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিন আজ। বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে পুলিশের পাশাপাশি অনেক জায়গায় নেমেছে সেনাবাহিনীও। আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন চলবে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত।
লকডাউনের প্রথমদিনে রাস্তাঘাট আগের তুলনায় কিছুটা ফাঁকা থাকলেও ব্যাক্তিগত গাড়ি চলতে দেখা যায়। তাছাড়া রাস্তার মোড়ে মোড়ে রিক্সা চলতে দেখা যায়। প্রতিটি মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। পুলিশ যাদের সন্দেহ করছে তাদের চেক করছেন। মূল সড়কের আশে পাশে দোকান-পাট বন্ধ দেখা গেলও, রাজধানীর অলিগলিতে কিছু কিছু জায়গায় দু একটা দোকান খুলতে দেখা যায়। রাস্তায় অনেক মানুষকে চলাচল করতেও দেখা যায়।
পুলিশের সঙ্গে থাকছেন ম্যাজিস্ট্রেটও। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার জন্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১০৬ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। ওই সব কর্মকর্তা বিভিন্ন বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে থেকে এই দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোভিড-১৯ বিস্তার রোধকল্পে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধিনিষেধ কার্যকর করার জন্য ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয়ভাবে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করবেন।
সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে। তারা কিভাবে দায়িত্ব পালনের করবে সেটা আজই বোঝা যাবে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে শুধু বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে বিধি-নিষেধ কার্যকর করার জন্য ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীকে মোতায়েন রাখা হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয়ভাবে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিধি-নিষেধ চলাকালীন সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ের কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনা-বিজিবি-পুলিশ-র্যাব ও আনসার নিয়োগ এবং টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে বিশেষ কোনও কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো এই বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
বুধবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সভায় আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের। পুলিশ সদর দফতর থেকে ভার্চুয়ালি সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপার ও থানার অফিসার ইন-চার্জসহ সব ইউনিট প্রধানদের এ নির্দেশনা দেন তিনি।
এছাড়া সরকার ঘোষিত কঠোর বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশও (বিজিবি) মাঠে রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকেই তারা মাঠে রয়েছে। থাকবে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে তারা সারাদেশে মোতায়েন থাকবে।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে কোস্ট গার্ড মোতায়েন রয়েছে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। তারাও ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কাজ করবে। কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (বিএন) আমিরুল হক এ তথ্য জানান।