চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) থেকে ১৫৬ জন শিক্ষককে একযোগে বদলি করায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার একাধিক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চমেক থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের বদলি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দিনভর চমেক হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে ‘টক অব দ্যা টাউন’ ছিল চিকিৎসক বদলির বিষয়টি। একইভাবে সামাজিক মাধ্যমেও অনেক চিকিৎসক বদলির বিষয়টি নিয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য করেন।
জানা যায়, চমেকের বিভিন্ন বিভাগের ১৫৬ চিকিৎসককে একযোগে বদলি আদেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে চমেক হাসপাতালে দেয়া হয়েছে ৩০ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে দেয়া হয়েছে ৬০ জন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে দেয়া হয়েছে ১৬ জন, ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আট জন, খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে ১৮ জন, ফেনীর দাগনভুঁইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭ জন ও ফেনী জেলা হাসপাতালে ২৪ জনকে বদলি করা হয়।
সচেতন চিকিৎসকদের মতে, বদলিকৃত অধিকাংশ শিক্ষক-চিকিৎসকের বয়স ৫০ এর বেশি। এসব চিকিৎসক করোনা চিকিৎসা কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়ার মত উপযুক্ততা নেই। ফলে বদলিকৃত চিকিৎসকদের কাছ থেকে শিক্ষা এবং সেবা দুটি থেকেই বঞ্চিত হবে রোগী ও মেডিকেল শিক্ষার্থী। তাই চিকিৎসকরা এ বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন।
স্বাচিপ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, এমন গণবদলি অতীতে কখনো দেখা যায়নি। অথচ বর্তমানে চমেক হাসপাতালে ২০০ করোনা রোগী এবং ২০০০ হাজার সাধারণ রোগী চিকিৎসাধীন আছে। এখন এসব রোগীর কি অবস্থা হবে। তাছাড়া এ গণবদলির কারণে স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য চিকিৎসা দুটোই হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, এ গণবদলি একটি অস্বাভাবিক এবং নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। মেডিকেল কলেজের সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপককে দেয়া হয়েছে জেলা হাসপাতালে কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং শিক্ষক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদর হাসপাতালে কী সেবা দিবেন। এগুলো অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত।
জানা যায়, বদলি আদেশকৃত চিকিৎসকরা নিজ নিজ কর্মস্থল, সেবা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ। এর মধ্যে উল্লেখ করার মত আছে- প্যাথলজিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট, কার্ডিওলজিস্ট, নিউরো সার্জন, জেনারেল সার্জন, দন্ত চিকিৎসক, চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ, নাক-কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। কিন্তু এখন এমন চিকিৎসকদের বদলি করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা জেলা সদর হাসপাতালে। উপজেলা বা সদর হাসপাতালে এসব বিশেষজ্ঞ শিক্ষক-চিকিৎসকের কাজ কি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।