করোনাভাইরাসের প্রভাবে সারাদেশে এখন কঠোর লকডাউন চলছে। লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে জনসমাগম ঘটছে রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে। পল্লবীর সেকশান সাত এর তিন নম্বর রাস্তায় প্রতিদিন কাঁচাবাজার এর পসরা নিয়ে বসে দোকানীরা। আজ শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় যেন মানুষের ঢল। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার নেই কোন বালাই। পুরো রাস্তায় প্রশাসনের কোন তৎপরতা নেই। নুন্যতম মাস্ক পর্যন্ত ব্যাবহার করছে না মানুষ।
চলমান বিধিনিষেধ এর ব্যতিক্রম ঘটিয়ে রাস্তার দুপাশেই খোলা আছে নিত্যপ্রয়োজনীয় মনোহারীর দোকান গুলো। অবাধে চলছে বেচাকেনা। রাস্তার দুপাশে ভ্যানে করে সবজী নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। জামা কাপড়ের পসরা সাজিয়ে জনা দশেক দোকানী। আর এসব দোকানে চলছে নারী পুরুষের অবাধ কেনাকাটা।
কোন কোন দোকানী আবার অর্ধেক সাটার নামিয়ে রেখে করছেন বেচাকেনা। এমনকি সেলুনেও চলছে চুলদাড়ি কাটার কাজ। রাস্তার এক মাথা থেকে অপর মাথা পর্যন্ত কোথাও কোন পুলিশ কিংবা প্রশাসনের কোন সদস্যকে দেখা যায়নি।
বিধি নিষেধ অমান্য করে এভাবে দোকান খুলে রেখে বেচাকেনা করার বিষয়ে জানতে চাইলে, দোকানীর সাফ জবাব, ‘কামায় না করলে খাইমু কি’। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, এভাবে দোকান খুলে রেখে বেচাকেনা করছেন, পুলিশ কিংবা প্রশাসনের লোকজন আসেনা? দোকানী বলেন, ‘আইছিলো সন্ধ্যায় পুলিশের গাড়ী, টহল দিয়্যা গ্যাছে গা’।
রাস্তায় উঠতি বয়সী যুবকদের আড্ডা ছিলো চোখে পড়ার মত। রাস্তার পাশে মটর সাইকেল রেখে রাস্তার উপরে জটলা করে, কোথাও আবার বেঞ্চিতে বসে আট দশ যুবককে মোবাইল নিয়ে মেতে থাকতে দেখা যায়।
রাস্তার পাশে ফুটপাথের চায়ের দোকান গুলোতে এমনকি ছোট হোটেল গুলোতেও শুধু যুবকই নয় মাঝ বয়সী মানুষেরও অভাব ছিলো না। চা খেতে খেতে আড্ডায় মশগুল মানুষের ভাব দেখে বোঝার কোন উপায় নেই যে এখানে লকডাউন কিংবা সরকারি বিধি নিষেধের কোন বালাই আছে।
প্রতিদিন এতো মানুষের মৃত্যু ঘটছে এই করোনায়, এমন মন্তব্য করতেই একজন মহিলা ক্রেতার মন্তব্য, ‘আমার তো মনে হয় এগুলা করোনায় মরে না, এগুলা রাজনীতির কারসাজি হইতাছে। একদিকে এলাকার মানুষের মাঝে নেই কোন সচেতনতা। অপরদিকে, প্রশাসনের নেই কোন নজরদারী। সাধারন মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে সিটি কর্পোরেশান বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্দৌগ না থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এমন ধারণার জন্ম হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন জনৈক সচেতন নাগরিক।
প্রশাষনের নজরদারির বিষয়ে জানতে পল্লবী থানার অফিসার ইন চার্জের (ওসি) সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে পুলিশের পল্লবী জোনের এডিসি আরিফুল সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের টহলদল বিধিনিষেধ কার্যকরে তৎপর আছে। এছাড়াও আমি এক্ষুনি উক্ত এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স পাঠাচ্ছি।