ব্যস্ততম সড়কের উপর কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ জোরপূর্বক দাঁড় করিয়ে রাখা দুই ননদ-ভাবিসহ অন্তত তিন জনকে পিষে মারলো একটি দ্রুতগামী বালুবাহী ট্রাক। ওই ঘটনায় তিন বছরের এক শিশুসহ অন্তত আরও চারজন আহত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার (১১ জুলাই) দুপুর পৌনে একটার দিকে লামা-চকরিয়া মহাসড়কের পশ্চিম লাইনঝিরি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান হতাহতের খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন, আলীকদম উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সিরাজ কারবারি পাড়ার গোবিন্দ্র দের স্ত্রী চিনু দে (৩৫) এবং শুভ দাশের স্ত্রী রূপসী দে প্রকাশ অপসী (২২)। তারা দুইজন সম্পর্কে ননদ ও ভাবি। অপরজন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আধুনগর সিদকার পাড়ার জিয়াবুল হকের ছেলে মুক্তার আহাম্মদ (৫০)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লামার পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে ছয় যাত্রী নিয়ে লামা হয়ে চকরিয়া যাচ্ছিল একটি মাহেন্দ্র। লামার লাইনঝিরি এলাকা অতিক্রম করার সময় সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (টিএএসআই) আর্জু মাহেন্দ্রটিকে থামানোর জন্য চালককে ইশারা দেন।
তবে চালক ওই নির্দেশ উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির মোটরসাইকলে নিয়ে পেছন থেকে দৌঁড়ে লামা পৌরসভার পশ্চিম লাইনঝিরি এলাকায় গিয়ে টিএএসআই আর্জু মাহেন্দ্রটিকে আটক করেন। মাহেন্দ্র থেকে ছয় যাত্রীদের নামিয়ে রাস্তার উপর দাঁড় করিয়ে তর্কে লিপ্ত হন। আর ওই সময় চকরিয়া থেকে আসা একটি বালুবাহী ট্রাক (চট্ট মেট্রো ট-১১-৮৬৮৯) তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চিনু দে ও মুক্তার আহমেদ দুইজন প্রাণ হারান। এছাড়া অপসী দাশ (২২), তার কন্যা অংকিতা দাশ (৩), সাগর (২৫) এবং জাহাঙ্গীর (৫০) নামে ৪ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপসীকে মৃত ঘোষণা করেন।
লামা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্তব্যরত আবাসিক ক্লিনিক কর্মকর্তা চিকিৎসক রবিন জানান, দুর্ঘটনায় আহত অংকিতা দাশ নামে তিন বছরের শিশুটির অবস্থা আশঙ্কা জনক। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাগর এবং জাহাঙ্গীর নামে দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে এই হতাহতের ঘটনার পর পরই দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন টিএএসআই আর্জু। তাঁর মোবাইলে বারবার ফোন করেও এই ঘটনায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর খবর পেয়ে লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. রিজওয়ানুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসলেও গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। সূত্রঃ ভোরের কাগজ।