আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের জঙ্গিরা নতুন করে নাশকতায় মেতে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
এ অবস্থায় উগ্রবাদীদের পুনরুত্থান ঠেকাতে সব ধরনের নজরদারি আছে বলে দাবি কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের। আর ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, জনমত উপেক্ষা করে অস্ত্র ঠেকিয়ে মসনদ দখলকে ইসলাম সমর্থন করে না।
দেশের রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস নাশকতা একুশে গ্রেনেড হামলার কুশীলবরা ছিল আফগান ফেরত। পরে তারাই গড়ে তুলে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ। সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসায় উগ্রবাদীরা আবারও মাথাচাড়া দিতে পারে বলে আশঙ্কা।
তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তালেবানদের পুনরুত্থানে অনুপ্রাণিত হয়ে উগ্রবাদী যাতে দাঁড়াতে না পারে সে জন্য অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও মনিটরিং করা হচ্ছে।
ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা অনলাইন স্পেস নিয়েও কাজ করি এবং সেখানেও আমাদের প্যাট্রোলিং আছে। আমরা এর মাধ্যমেও তাদের শনাক্ত করতে সক্ষম হই।
এদিকে তালেবানদের ক্ষমতা দখলের খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। তবে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর আদর্শ ইসলামের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সরকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কারও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা বা না করার ওপর ইসলামের বিজয় নির্ভর করে না। ইসলামের নামে তাদের মূর্তি ভাঙতে দেখেছি। অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মের উপাসনালয় ভাঙতে, ইসলামের নামে বিরোধিতা করতে, ধূলিসাৎ করতে, ধ্বংস করে দিতে। মূলত ইসলামের সঙ্গে এগুলো কোনোভাবেই যায় না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, উগ্রবাদীরা এখন কিছুটা কোণঠাসা থাকলেও সবসময় এরা অনুকূল পরিবেশের অপেক্ষায় থাকে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সুযোগে দেশে তারা যেন তৎপর হওয়ার চেষ্টা করতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, এই আফগানিস্তানি তাদের সবচেয়েে বড় পৃষ্ঠপোষক ছিল যখন তালেবান ক্ষমতায় ছিল। সুতরাং সেই জায়গাটি আবার তারা ফিরে পাচ্ছে। সংগত কারণে, তারা আবার নতুন ভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবে এবং আফগানিস্তানে গিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণ, সেখান থেকে অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করবে। এরপর বাংলাদের এসে আগের মতোই তারা বড় ধরনের অঘটন ঘটানোর চেষ্টা করবে।
সম্প্রতি জিহাদে অংশ নিতে বেশ কয়েকজন আফগানিস্তানের পথে রওনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।