সন্ধান মিলেছে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির। কাবুল ছাড়ার পর তিনি আশ্রয় নিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশ ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি নিজেই এ তথ্য জানান। একই সঙ্গে দেশ ছাড়ার সময় বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ নিয়ে আসার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গনি। খবর আল জাজিরা ও বিবিসির।
গত রোববার তালেবানের কাবুল দখলের মুখে আকস্মিক দেশ ছাড়েন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। এর পর তিনি কোথায় আছেন সেটা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চিয়তা। প্রাথমিকভাবে জানানো হয়, আশরাফ গনি প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে গেছেন। সেখানেই রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকবেন তিনি।
তবে ওইদিনই তাজিকিস্তান সরকার আশরাফ গনিকে বহনকারী উড়োজাহাজ তাদের দেশে নামার অনুমতি দেয়নি বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়। বলা হয়, তাজিকিস্তানে নামতে না পেরে গনি ওমানে গেছেন। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
এর মধ্যেই আশরাফ গনি দেশত্যাগের সময় চারটি গাড়ি ও একটি হেলিকপ্টার ভরে নগদ অর্থ নিয়ে গেছেন বলে খবর মিলে। সোমবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাবুলে রাশিয়া দূতাবাসের বরাত দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ এ খবর প্রকাশ করেছে।
কাবুলে রুশ দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশচেঙ্কোর বরাত দিয়ে আরআইএ জানায়, দেশ ছাড়ার সময় আশরাফ গনির সঙ্গে চারটি গাড়ি ভরা নগদ অর্থ ছিল। নগদ অর্থের আরেকটি অংশ একটি হেলিকপ্টারে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। জায়গা না থাকায় তা বিমানবন্দরেই ফেলে যান আশরাফ গনি।
এদিকে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাজিকিস্তানের আফগান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জহির আকবর জানান, প্রেসিডেন্ট গনি এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন। যাওয়ার সময় তিনি প্রায় ১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ করেন এই রাষ্ট্রদূত।
তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ জহির আকবর গনির আফগানিস্তান ছেড়ে এ পলায়নকে ‘দেশ ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা’ বলে দাবি করেন। এসময় গনির সাবেক ডেপুটি আমরুল্লাহ সালেহকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বলে অভিহিত করেন জহির।
এর পরপরই আশরাফ গনি তাঁর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছি। তালেবানের কাবুল দখলের মুখে ব্যাপক রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়েছি। আমি চাইনি আফগানিস্তানে নতুন করে সিরিয়া কিংবা ইয়েমেনের মতো রক্তপাত হোক। এর মধ্য দিয়ে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’
বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ নিয়ে দেশ ছাড়ার অভিযোগকে ‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেন আশরাফ গনি। তিনি জানান, নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের তাড়া থাকায় সম্পত্তি ও গোপনীয় নথি রেখেই দ্রুত দেশ ছাড়তে হয়েছে। বিমানবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তারা দেখেছেন তিনি নগদ অর্থ সঙ্গে আনেননি।