বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন। এ সময় “আমার দলের ক্ষতি করার আগে এখান থেকে সরাসরি রিজাইন দিয়া চলে যাওয়া ভালো আমার জন্য।” বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার ফেসবুক থেকে এই লাইভ করা হয়। লাইভ ভিডিও ক্লিপটি ফেসবুকে আপলোড করার ১০ মিনিট পর ফের মুছে ফেলেন।
ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নগরীর কালী বাড়ি রোডে সিটি মেয়রের বাস ভবনের পেছনের গেটে অবস্থান নেয়। বিষয়টি টের পেয়ে মেয়র নিজে বাসা থেকে বেড়িয়ে এসে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদের কাছে তার বাসার সামনে অবস্থান নেয়ার কারণ জানতে চান। মেয়রকে দেখেই তারা সেখান থেকে চলে যেতে থাকেন। মেয়রও তাদের পেছনে পেছনে হাটতে হাটতে কালী বাড়ি রোডের সমাজসেবা কার্যালয়ের সামনে পর্যন্ত যান। যদিও তিনি পুলিশ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়ের করা দুটি মামলার প্রধান আসামি।
হাটতে হাটতে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদের মেয়র বলেন, আপনারা আমার প্রটেকশনের জন্য এসেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। আপনারা এভাবে সাদা পোশাকে আমার বাসায় এসে কি করতে চান? তার মানে কি সরকারকে ডোবাতে চান? আমার বাসা থেকে যারা বের হচ্ছে তাদের হ্যারেজমেন্ট (হয়রানি) করছেন কেন? এভাবে হ্যারেজমেন্ট না করে আমাকে বলুক আমি অ্যারেস্ট হয়ে যাবো। আমি তো আগেই বলেছি, আগেই ইঙ্গিত দিয়েছি এ রকমের কোনও ঘটনা ঘটাতে যাচ্ছে তারা (প্রশাসন)।
ফেসবুক লাইভে বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় মেয়র সাদিক বলেন, আমি কিন্তু চুপ কইরর্যা আছি। মাটি কামরাইয়া রইছি। মাংস কামরাইয়া রইছি। গুলি হইছে, আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হইছে। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা শহরে যাইতে দেতে আছে না পুলিশ। কোন পরিস্থিতিতে আছি আমরা। এইটা কেমন কথা। আমি একজন মেয়র, এখানে সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন তারা মিল্ল্যা কি করতেছে? বুঝলাম না, হোয়াট ইস দিস। এইটা কোন মেয়রের ক্ষমতা। ক্ষমতারও বিষয় নয় এখানে। তারা কি চাচ্ছে- তারা গুলি করলে আমরা পাল্টা গুলি করবো? এইটা চাইছিলো হয়তো বা। এই যে যা করতেছে, আমরা একটা মিছিল করি না, প্রতিবাদ সভা করি না। কারণ এই সরকার তো আমাদের সরকার। নৌকা মার্কার সরকার। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার। আমি এখানে নাড়া দিলে ক্ষতি ওনাদের (প্রশাসন) হবে না তো, ক্ষতি হবে আমার দলের। আমার দলের ক্ষতি করার আগে এখান থেকে সরাসরি রিজাইন দিয়া চলে যাওয়া ভালো আমার জন্য।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁইয়া বলেন, নিরীহ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। যারা ইউএনও’র বাসায় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ কিংবা আহত কাউকে উন্নত চিকিৎসা নিতে পুলিশ বাঁধা দেয়নি এবং দেবে না বলেও জানান উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভূঁইয়া।