fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িসারাদেশবরিশালবরিশালে তুচ্ছ ঘটনায় মেয়র-প্রশাসন দ্বন্দ্বের নেপথ্যে.....

বরিশালে তুচ্ছ ঘটনায় মেয়র-প্রশাসন দ্বন্দ্বের নেপথ্যে…..

বরিশাল সদর উপজেলা চত্বর থেকে শোক দিবসের ব্যানার অপসারণের পেছনে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর একক আধিপত্য বিস্তার প্রধান কারণ হলেও প্রশাসনের শক্ত অবস্থানে রয়েছে পূর্ব দ্বন্দ্ব। এছাড়া কাউন্সিলর মান্নার সঙ্গে পুলিশের দ্বন্দ্ব যা থেকে মেয়রের সাথেও দ্বন্দ্বে রূপ নেয়।

প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের সঙ্গে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর দ্বন্দ্ব আগে থেকেই ছিল। তবে ১৮ আগস্টের ঘটনার পর এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নেয়। মূলত ওই সকল কারণেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী এই দ্বন্দ্ব আলোচনা-সমালোচনার জন্ম নেয়। সুশীল সমাজের দাবি যত দ্রুত সম্ভব প্রতিমন্ত্রী, মেয়র ও প্রশাসনের মধ্যকার এই দ্বন্দ্ব সমাধান করতে হবে। তা না হলে ভোগান্তি পোহাতে হবে নগরবাসীকে।

সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর সাথে জেলা প্রশাসনের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় চলতি বছরের মে মাসে। এই দ্বন্দ্বের পেছনে কারণ ছিল দুটি। একটি হলো ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরিশালে ব্যক্তিগত সফরে আসেন। সেই বিষয়টি জেলা প্রশাসক মেয়রকে জানাননি। এতে ক্ষুব্ধ হন মেয়র।

দ্বিতীয়ত মে মাসের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যারা সদস্য ছিলেন তারা ফুটপাত দখল ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ওই সভার রেজুলেশন মেয়রকে পাঠানোর কারণে জেলা প্রশাসকের উপর আরো ক্ষুব্ধ হন মেয়র।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দীন হায়দার সাংবাদিকদের বলছিলেন ‘ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রী ঝালকাঠি এসেছিলেন তার বেয়াইর বাড়িতে বেড়াতে। সেখান থেকে ব্যক্তিগতভাবে আমার বাসায় বেড়াতে আসেন। এটা মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সফল ছিল তাই তিনি (মন্ত্রী) আমাকে কাউকে জানাতে নিষেধ করেছিলেন। এ কারণে আমি কাউকে জানাইনি। যদি সরকারি সফর থাকতো তাহলে আমরা সবাইকে জানাতাম।

এছাড়া আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার রেজুলেশন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মন্ত্রী, এমপি, মেয়রকে জানাতে হয়। তাই আমি সভার রেজুলেশন তাকে (মেয়র) পাঠিয়েছিলাম। এতে উনি (মেয়র) একটু মনোক্ষুণ্ন হয়েছেন। যেহেতু উনি মনোক্ষুণ্ন হয়েছেন তাই এখন থেকে তাকে আর জানাবো না আমাদের কাজ আমরা করবো বলে জানান জেলা প্রশাসক।

এরপর করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে নগরীতে লকডাউন শুরু হলে সরকার থেকে নগদ অর্থ ও চাল দেয়া হয়। যা জেলা প্রশাসক বণ্টন করেন। এতেও ক্ষুব্ধ হন মেয়র। এ কারণে ওই টাকা ও চাল বণ্টন করেন না। বিষয়টি জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদেরও অবহিত করেন। পরবর্তীতে মেয়র ওই টাকা ও চাল বিতরণ করেন।

জানা যায়, পুলিশের সঙ্গে মেয়রের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের সূত্রপাত চলতি বছরের ২৭ মে। নগরীর ২১নং ওয়ার্ডের মানুমিয়ার লেনে জমি বিরোধের জেরে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (অপারেশন) আনোয়ার হোসেনকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহেমদ মান্না। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তার পোশাক খুলে নেয়াসহ অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করা হয়। যা মোবাইলে ধারণ করে কে বা কারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে তা ভাইরাল হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করে। এ ঘটনার পর পর মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর বাসায় জরুরি সভা করে মহানগর আওয়ামী লীগ। সভায় মেয়র ও আওয়ামী লীগের নেতারা মান্নার পক্ষ নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের বিরূপ মন্তব্য করার কারণে পুলিশের সাথে বিরোধ দেখা দেয় মেয়রের।

এছাড়া বিভিন্ন সময় মেয়র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিরূপ মন্তব্য করেন। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে ‘আমার পুলিশ ও প্রশাসন দরকার হয় না’। আমার কাজ আমি করি। আমি সাধারণ মানুষের ফোন ধরব, তারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি তো পুলিশ ও প্রশাসনের ফোন ধরতে বাধ্য না। তার কাজে প্রশাসনকে নাক গলাতে মানা করেন।

ছোটখাটো এসব বিষয় নিয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আর এ বিরোধ নগরবাসী অবহিত। মেয়র লাইভে এসে বিষয়গুলো তুলে ধরতেন।

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মেয়রের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। যা সকলে অবহিত থাকলেও ১৮ আগস্ট রাতে প্রতিমন্ত্রীর শোক দিবসের ব্যানার নামাতে গিয়ে হামলা-মামলা হওয়ায় এখন তা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সদর আসনের সকলে জোরেশোরেই বলে বেড়াচ্ছে জাহিদ ফারুক শামিমের নেতৃত্বকে ধূলিসাৎ করতে তার ছবি সম্বলিত শোক দিবসের ব্যানার নামাতে গিয়ে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রঃ মানবকন্ঠ।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments