আফগানিস্তানে তালেবানের অন্যতম মিত্র পাকিস্তান। দেশটি তাদের সূচনালগ্ন থেকেই সৈন্য, সামরিক সরঞ্জামাদি, পরামর্শ এবং নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছে। এ কথা জানিয়েছেন ভূ-রাজনীতি ও পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ফ্যাবিয়েন বাউসার্ট। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
পাকিস্তানকে ‘আসল শত্রু’ আখ্যা দিয়ে সেন্টার অব পলিটিকাল অ্যান্ড ফরেন অ্যাফেয়ার্সের সভাপতি ফ্যাবিয়েন বাউসার্ট টাইমস অব ইসরায়েলে লেখেন, ‘এই দেশটি তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনার নামে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান দীর্ঘ দুই দশক পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে লোক দেখানো সহযোগিতা ও শান্তি আলোচনার অভিনয় করে এখন আফগানিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা রূপে আবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখনো অপ্রাসঙ্গিকভাবে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ঢাক বাজাচ্ছে। মাঝে মধ্যে তালেবানকে শাসানোরও চেষ্টা করছে। তবে তারা এখনো এটা বুঝতে পারেনি যে, তালেবান হলো লক্ষণ আর পাকিস্তান হলো আসল রোগ।’
পাকিস্তান কর্তৃক তালেবানকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘পাকিস্তান তালেবানকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করেছে। ৯/১১ এর পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সেনারা আফগানিস্তানে যখন তালেবানের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় তখন গোপনে তালেবানকে সহায়তা করে পাকিস্তান। সীমান্ত খুলে দেওয়া, নিরাপদ আশ্রয় তৈরি করা, এমনকি আকাশপথে ব্যবহার করেও তালেবানদের পাকিস্তানে নিয়ে আসা হয়। দেশটির এমন চরিত্রের কারণে বিশ্ব তাদের সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবেই চেনে। ’
উল্লেখ্য, গত রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে নেয় দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। দুই দশক পরে দেশটির শাসন ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে তারা। এভাবে তালেবানের ফিরে আসায় আতঙ্কিত হয় আফগানরা। ফলে তাদের মধ্যে দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে কূটনীতিক চাল চালে তালেবান। বিশ্বে তাদের ইতিবাচক ইমেজ তৈরি করতে আফগানিস্তানে সবাইকে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করে দেশটি৷ তবে অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার পরেও যেসব আফগানরা ন্যাটো সৈন্যদের সহায়তা করেছিলেন, তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশ আফগানিস্তান থেকে তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের সরিয়ে নিচ্ছে। যারা দেশটি থেকে এখনই কূটনীতিক ও তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নেননি তারা কাবুলের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।