রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ক্যান্সার ও করোনার জন্য বহুল ব্যবহৃত দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ এবং ওষুধ তৈরির সরঞ্জামসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন।
বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর কাজলা, আরামবাগ ও মিটফোর্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার লালবাগ বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একমি কোম্পানির মোনাস-৭০০ বক্স, স্কয়ার কোম্পানির সেকলো- ৫০ বক্স, জেনিথ কোম্পানির ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস-৭৪৮ বক্সসহ অন্যান্য কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ, ওষুধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও ওষুধের খালি বক্স উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, একটি অসাধু চক্র নকল ওষুধ বাজারজাত করছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। ধারাবাহিক অভিযানে এ প্রতারক চক্রের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার তরিকুল ইসলাম ও সৈয়দ আল মামুন কারখানা স্থাপন করে জীবন রক্ষাকারী এ সকল নকল ওষুধ তৈরি করে। সাইদুল ইসলাম এ নকল ওষুধ তৈরির প্রধান কারিগর, মনোয়ার এ্যালো এ্যালো ফয়েল ও আবদুল লতিফ ওষুধ পাতায় ছাপ দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসহ সিলিন্ডার সরবরাহ করতো। গ্রেপ্তার নাজমুল ঢালী ওষুধের বক্সে ছাপ দেয়ার পর তৈরি এ সকল নকল ওষুধ গ্রেপ্তার সাগর আহমেদ মিলনের নেতৃত্বে মিটফোর্ডের কয়েকটি গ্রুপের মাধ্যমে বাজারজাত করা হত।
তিনি আরও বলেন, এই সকল ওষুধের ইনগ্রিডিয়েন্টসে মূলত প্রয়োজনীয় কোনও সক্রিয় উপাদান থাকে না। এছাড়া মেইন স্টার্চ নিম্ন গ্রেডের ব্যবহৃত হয়। এমনকি স্টেরয়েড ও ডাই ব্যবহৃত হতে পারে। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এর মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। এ সকল নকল ওষুধ সাধারণ মানুষের জন্য মরণ ফাঁদ।
বিশ্ব বাজারে ১৪৫ টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ভেজাল এবং নকল ওষুধ এই সুনাম এবং আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মফস্বলের ওষুধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে একটি অসাধু সংঘবদ্ধ চক্র সারাদেশে ভেজাল ও নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ ধরনের ওষুধ মাদকের চেয়েও ভয়াবহ বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সাংবাদিকদের উদ্দেশেএ সময় তিনি বলেন, যদি কেউ আমাদের নকল ওষুধ কারখানা সমন্ধে অবগত করেন তাহলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বংশাল থানায় করা মামলায় আদালতে পাঠানোর পর তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।