fbpx
শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
বাড়িজাতীয়অর্থনীতিবিএসআরএম স্টিল মিলের ৬৬ কোটি টাকা আয়কর ফাঁকি

বিএসআরএম স্টিল মিলের ৬৬ কোটি টাকা আয়কর ফাঁকি

বিএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে ৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আয়কর ফাঁকির অভিযোগ উত্থাপন করেছে অডিট বিভাগ। অননুমোদিত বিনিয়োগ আয় হিসাবে গণ্য না করায় আয়কর ও সরল সুদ বাবদ কম প্রদান করায় এই অনিয়ম হয়েছে বলে স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদফতরের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কর কমিশনারের কার্যালয়, বৃহৎ করদাতা ইউনিট (আয়কর), ঢাকার ২০১৬-২০১৭ সালের হিসাব নিরীক্ষাকালে বিএসআরএম স্টিল মিলসের কর নথি, বার্ষিক নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে অডিট বিভাগ এই অনিয়ম পেয়েছে।

তবে বিএসআরএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেন গুপ্ত বলেছেন, এই অডিট রিপোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। অডিট রিপোর্টে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়।

তিনি বলেন, নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে অননুমোদিত বিনিয়োগ করদাতার আয় হিসাবে গণ্য না করায় আয়কর ও সরল সুদ বাবদ কম প্রদান করা হয়েছে ৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে বৃহৎ করদাতা ইউনিট আয়কর আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সরকারি আর্থ-ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে সরকারি কোষাগারে আয়কর কম জমা হয়েছে। যথাসময়ে ওই অর্থ আদায় করা হলে সরকারের বাজেটে ফাঁকি বিএসআরএমের ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটত।

প্রতিবেদনে অনিয়মের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে করদাতা কর্তৃক আয়কর রিটার্নের সঙ্গে দাখিল করা বার্ষিক অডিট রিপোর্টে (২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর) শেয়ার ক্যাপিটাল বৃদ্ধি ১৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা প্রদর্শন করা হলেও আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ১৯ (২৪)-এর বিধান অনুযায়ী ওই বিনিয়োগের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন করা হয়েছে এমন কোনো প্রমাণপত্র আয়কর নথিতে পাওয়া যায়নি। ফলে ওই ধারার বিধান অনুযায়ী বিনিয়োগকৃত টাকা করদাতার আয় হিসাবে গণ্য এবং মোট আয়ের সঙ্গে যোগযোগ্য হলেও তা করা হয়নি।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (স্মারক নং-০৮.০৩৭.০০১.১১.০০.০২১.২০১০-৮০ তারিখ ২৩/০৯/২০১৮) মাধ্যমে সর্বশেষ জবাবে জানানো হয় যে, নিরীক্ষায় উত্থাপিত আপত্তিসহ অডিট ইস্যু নির্ধারণপূর্বক কর মামলাটি অডিটের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে অনুমোদন জ্ঞাপন করা হয়েছে। অডিট আপত্তির বিষয়গুলো আইনানুগভাবে বিবেচনা করে আয়কর মামলা নিষ্পত্তি করা হবে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয় আপত্তিটিকে এআইআরে অন্তর্ভুক্ত করে ব্রডশিট জবাব প্রদানের জন্য ২০১৮ সালের ১৪ মে স্থানীয় অফিস বরাবর পত্র প্রেরণ করা হলেও জবাব না পাওয়ায় ৪ জুলাই অগ্রিম অনুচ্ছেদ ইস্যু এবং ওই বছরের ৯ আগস্ট তাগিদপত্র ইস্যু করা হয়। তারপরও জবাব না পাওয়ায় সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট আধা-সরকারি পত্র জারি করা হলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (স্মারক নং ০৮.০৩৭.০০১.১১.০০.০২১.২০১০-৮০ তারিখ ২৩/০৯/২০১৮) মাধ্যমে সর্বশেষ জবাবে জানানো হয় অডিট আপত্তির বিষয়গুলো আইনানুগভাবে বিবেচনা করে আয়কর মামলা নিষ্পত্তি করা হবে। সর্বশেষ জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ কার্যালয়ের (স্মারক নং ২৯৭১/রাজস্ব-৪/ এনটিটি ওয়াইড অডিট /নি.প্র./২০১৬-২০১৭/১৭৯, তারিখ : ১৬/৫/২০১৯) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে যে, কর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে অডিট আপত্তিতে জড়িত টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমার ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

তবে বিএসআরএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেন গুপ্ত আরও বলেন, শেয়ার ক্যাপিটালসহ সব লেনদেনই ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধভাবে অ্যাকাউন্টপেয়ী চেকের মাধ্যমে হয়েছে। তাই অনিয়মের যে অভিযোগ তা সঠিক নয়। সৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও করদাতাদের হয়রানি ও ব্লাকমেইলিং করে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে এ ধরনের ভিত্তিহীন অডিট রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। সরকারের উচিত এ ধরনের অডিট রিপোর্ট যারা তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ফৌজদারি মামলা করা। কারণ এ ধরনের ভিত্তিহীন অডিট রিপোর্টের কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments