পুলিশি নির্যাতনে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানা ঘেরাও করে ভাঙচুর করেছে শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় তারা থানায় হামলা চালিয়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষ, নারী-শিশু, ডেস্ক, গাড়ির গ্যারেজ, পিকআপ ভ্যানসহ বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল, থানার সিসি ক্যামেরা, আসবাবপত্র ও দরজা-জানালা ভাঙচুর করে।
এ ছাড়া পুলিশ ব্যারাক পৌরসভায় হওয়ায় উত্তেজিত জনতা সেখানেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায়। এতে আরটিভির ক্যামেরা পারসন ডালিম মিয়া, সময় টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন তরিকুল ইসলাম ও রাহাতসহ ১০ জন আহত হন।
এক পর্যায়ে পুলিশ ধাওয়া খেয়ে থানার প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে থানার ২য় তলায় অবস্থান নেয়। পরে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপসহ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে।
আজ সোমবার সন্ধ্য সাড়ে ৬ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুরো হারাগাছ জুড়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ তলব করা হয়েছে।
হারাগাছ পৌরসভার মেয়র এরশাদুল হক এরশাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভা নতুন বাজার সাবানটারী এলাকার তাজুল ইসলামকে মাদক সেবনের অভিযোগে আজ সন্ধ্যায় দরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছন থেকে আটক করে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানা পুলিশ। এ সময় সেখানে তাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। পরে পুলিশি নির্যাতনে ঘটনাস্থলেই তাজুল ইসলামের মৃত্যু হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া জানান, পুলিশ তাজুলের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতন করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। তাজুলের কাছে কোনো মাদক পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত হোসেন ও ওসি (তদন্ত) ফিরোজ ওয়াহিদের মোবাইল নম্বরে দফায় দফায় ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
তবে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আলতাফ হোসেন তাজুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাজুল ইসলাম হিরোইন বিক্রেতা ও হিরোইনসেবী। তাকে আটকের পর তিনি ভয়ে মাটিতে বসে মলমূত্র ত্যাগ করে ঘটনাস্খলেই মারা যান।
পুলিশের এই কর্মকর্তার মন্তব্য ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য থানা ঘেরাও করা হয়। তবে কারা এবং কি উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন তা তিনি সুনিদ্দির্ষ্ট করে জানাতে পারেননি।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম জানান, ঘটনার বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। পরে সাংবাদিকদের জানাবেন।