fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িরাজধানীগাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার

গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির ৫০ নেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়র জাহাঙ্গীর ‘অমার্জনীয় অপরাধ’ করেছেন। তিনি জাতির জনক ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেসব কথা বলেছেন, তা সংবিধান লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। তাঁকে ক্ষমা করা যাবে না। দল থেকে বহিষ্কারের পর সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকতে পারবেন কি না, সে বিষয়টি আইনি পথে ফায়সালা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা গণমাধ্যমকে জানান, জাহাঙ্গীর আলমের প্রসঙ্গটি নিয়ে কথা শুরু করেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস। তিনি জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কারের পক্ষে বক্তব্য দেন। পরে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজীও তাঁদের বক্তব্যে জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাঁকে পাঠানো কারণ দর্শানোর চিঠি এবং জাহাঙ্গীরের জবাব পড়ে শোনাতে বলেন। চিঠি দুটি পড়ে শোনান আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ। এ সময় সভায় উপস্থিত বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় নেতা সমস্বরে জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা দল থেকে জাহাঙ্গীরকে বাদ দিলাম। এখন আইনের পথে অন্য বিষয়গুলোর ফায়সালা হবে।’

গত অক্টোবরে জাহাঙ্গীর আলমের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গোপনে ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। এর পরই তাঁর শাস্তির দাবিতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

জাহাঙ্গীর আলম তখন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অতি উৎসাহী হয়ে তাঁর বক্তব্য সম্পাদনা করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। তিনি গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার।

গত ৩ অক্টোবর দলীয় স্বার্থপরিপন্থী কর্মকাণ্ড ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানের চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে জাহাঙ্গীর আলমকে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়। চিঠির জবাব দিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান জাহাঙ্গীর।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, জাহাঙ্গীর আলমের জবাব আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য মনে করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments