ভারতের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব থেকে বিরাট কোহালিকে সরিয়ে দেয়ার পরই উত্তাল হয়ে পড়েছে ভারতীয় ক্রিকেট মহল। টুইটারে চালু হয়ে গেছে ‘শেম অন বিসিসিআই’ এবং ‘উই স্ট্যান্ড উইথ কোহালি’ প্রচার।
বুধবার রাতে কোনো কারণ না দেখিয়ে ওয়ান ডে দলের নেতৃত্ব থেকে কোহালিকে কেন সরিয়ে দেয়া হলো, তা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়েছেন বিরাট-ভক্তেরা। তাদের বক্তব্য, এভাবে অধিনায়ক বদলে আদৌ লাভ হবে? ওয়ান ডে-তে অধিনায়ক হিসেবে ৯৫ ম্যাচ খেলেছেন বিরাট। দল জিতেছে ৬৫ ম্যাচ। নেতা হিসেবে ৫৪৪৯ রান করেছেন। গড় ৭২.৬৫। জয়ের হার শতকরা সত্তর শতাংশের বেশি। ভক্তদের প্রশ্ন, তবু কেন কোহালিকে সরানো হলো!
সবচেয়ে বেশি কথা উঠেছে অপসারণের ভঙ্গি নিয়ে। বুধবার জারি করা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিবৃতিতে চরম হেলাফেলা করে একেবারে শেষের দিকে উল্লেখ করা হয়েছে, ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রোহিত শর্মাকে সাদা বলের অধিনায়ক বাছা হয়েছে। কোহালির নাম পর্যন্ত করা হয়নি। এমনকি, সাদা বলের ক্রিকেটে তার যে এত দিনের অবদান, তার প্রতি বিন্দুমাত্র সম্মান দেখানোর প্রয়োজন মনে করেনি বোর্ড। এক ভক্ত টুইটারে লিখেছেন, ‘৯৫টি ম্যাচে ৬৫টি জিতেছেন বলে সরানো হল? এ দেশে খেলায় রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটছে। কিন্তু এক জন প্রাক্তন অধিনায়ক তাতে সামিল হচ্ছেন, সেটাই দুর্ভাগ্যজনক।’ বিরাট কোহালিকে সরানোর সিদ্ধান্তের চেয়েও বেশি করে সমালোচনা হচ্ছে তার অবদানকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে হেলাফেলা করে সরানোর ভঙ্গি নিয়ে।
ক্ষোভের আর একটি বহিঃপ্রকাশ এ রকম, ‘অতীতে গ্রেগ চ্যাপেলের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে পড়ায় সৌরভকে এ ভাবেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অধিনায়ক হয়েছিল রাহুল দ্রাবিড়। নেতৃত্ব থেকে কোহালিকে সরানোর সময় দ্রাবিড় কোচ আর সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট।’ কারো কারো ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘বিরাটের আরো সম্মান প্রাপ্য ছিল। নিশ্চয়ই এক লাইনের বিবৃতি নয়। বোর্ড অন্তত তার অবদানকে স্বীকৃতি দিতে পারত।’ কারো কারো মন্তব্য, ‘ভারত অধিনায়কদের মধ্যে দু’জনই শুধু বিশ্বকাপ জিতেছেন। কপিল দেব এবং ধোনি।’ তবে অপর পক্ষ মনে করছে, বিশ্বমঞ্চে ভারতকে নেতৃত্ব দেয়ার সময় কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোহালি।
বোর্ডের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথোপকথনের উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে না। সৌরভ-জয়দের বর্তমান প্রশাসনিক নীতিতে নির্বাচক প্রধানকে প্রশ্নের সামনে আসতে দেয়া হয় না। তারা নিজেরাও সংবাদ সম্মেলনে আসেন না। তবে গণমাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ব্যাকফুটে বোর্ড। বাধ্য হয়ে তারা কোহালির অবদানকে স্বীকার করে টুইট করেছে। তাতেও ভক্তদের রোষানল থেকে পুরোপুরি রক্ষা পাচ্ছেন না কর্তারা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা