সচেতন বার্তা, ২৩ জুলাই:গর্ভবতী যুবতীকে স্বামী পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু ভূমিষ্ঠ হওয়া কন্যাসন্তানের বাবা হিসেবে দাবি করলেন তিনজন। আর এই নিয়ে তুলকালাম দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানের এক বেসরকারি হাসপাতালে। দ্বিধায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তারা।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ২১ বছরের স্বপ্না মিত্রকে নিয়ে গাঙ্গুলিবাগানের আইরিশ হাসপাতালে আসেন দীপঙ্কর পাল। নিজেকে স্বপ্নার স্বামী বলে পরিচয় দিয়ে গর্ভবতী স্বপ্নাকে সেখানে ভর্তি করেন তিনি। হাসপাতালের বিলেও স্বামী হিসেবে লেখা হয় দীপঙ্করের নাম। স্থানীয় রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা এই দীপঙ্কর। রবিবার অস্ত্রোপচার করে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন স্বপ্না। আর ঝামেলা বাধে তার পরেই।
রবিবার সকালে হাসপাতালে এসে উপস্থিত হন নিউটাউনের ভিস্তা গার্ডেনের বাসিন্দা হর্ষ ছেত্রী। তিনি এসে বলেন, তিনিই ওই সন্তানের বাবা। এই খবর শুনে দ্বিধায় পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে সঙ্গে তারা যে ঘরে মেয়েকে নিয়ে স্বপ্না ভর্তি আছেন, সেই ঘরের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
ইতোমধ্যেই নেতাজীনগর থানায় গিয়ে পুলিশে অভিযোগ করেন হর্ষ। পুলিশের তরফে ফোন করা হয় হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, পুলিশ যা বলবে তাই করা হবে। এ ব্যাপারে তারা কিছু বলতে পারবেন না। তারা শুধু চিকিৎসার ব্যাপারটাই দেখবেন। কে আসল বাবা তা ঠিক করুক পুলিশ। রবিবার পুলিশ কাউকে ঢুকতে দেয়নি হাসপাতালে। জানিয়ে দেওয়া হয়, এই মুহূর্তে স্বপ্না খুবই দুর্বল। তিনি সুস্থ হয়ে ওঠার পর কথা বলা হবে তার সঙ্গে।
সোমবার সকালে ফের নেতাজীনগর থানার পুলিশ নিয়ে হাসপাতালে আসেন হর্ষ। তিনি এসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তার ও স্বপ্নার ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেখান। তিনি বলেন, আমি ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেখিয়েছি পুলিশকে। ও আমার বিবাহিত স্ত্রী। সেখানে অন্য কেউ কীভাবে আসছে আমি বুঝতে পারছি না। আমি আরও প্রামাণ দেব। এরপর দীপঙ্কর জানান, তার কাছেও কাগজ রয়েছে। তিনি মঙ্গলবার কাগজ নিয়ে আসবেন। এ কথা বলে স্বপ্নার মাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
এর মধ্যে আরও এক টুইস্ট। সোমবার সন্ধ্যায় প্রদীপ রায় নামে এক ব্যক্তি এসে দাবি করেন, তিনি ওই সন্তানের বাবা। মঙ্গলবার তিনিও লোক নিয়ে আসবেন বলে বেরিয়ে যান। এই বিষয়ে অবশ্য স্বপ্না বা তার মা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশের সামনে কোনও মন্তব্য করেননি। সব মিলিয়ে দ্বিধায় পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, স্বপ্না সুস্থ হয়ে উঠলে তারপরেই এই ঘটনার কিনারা করা সম্ভব হবে। সূত্র : দ্য ওয়াল