সচেতন বার্তা, ২৪ জুলাই:সামাজিক মাধ্যমে পদ্মা সেতু নিয়ে উদ্ভট যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, সেটা পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এর সঙ্গে বেশ কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালেরও সংশ্লিষ্টতা আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ প্রধান জাবেদ পাটোয়ারি।
দেশের সবচেয়ে বড় সেতুটি নির্মাণে এক লাখ মানুষের মাথা প্রয়োজন বলে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবিশ্বাস্য নানা ঘটনা ঘটেছে। ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এই মাথা সংগ্রহে ৪২টি দল কাজ করছে এবং তার প্রধানত শিশুদেরকে হত্যা করতে চাইছে।
গুজবে বিশ্বাস করে বিভিন্ন এলাকায় অপরিচিতদের দেখলেই পিটুনির ঘটনা ঘটেছে। খোদ ঢাকায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে অন্তত তিন জনকে। সারা দেশে এই সংখ্যাটি অন্তত ১০। মেয়েকে দেখতে যাওয়া বাবাকে হত্যা করা হয়েছে, মেয়েকে স্কুলে ভর্তির জন্য খোঁজ নিতে যাওয়া মাকে খুন করেছে উন্মত্ত জনতা। মানসিক বিকারগ্রস্থ নারীকে পেটানো হয়েছে তার কাঁধে ব্যাগ দেখে।
এর মধ্যে আবার নতুন গুজব ছড়ানো হচ্ছে, দুই দিন দেশে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে ঘরে ঢুকে শিশুদেরকে হত্যা করা হবে। বিশেষত স্বল্পশিক্ষিতদের মধ্যে গুজবের ভয়াবহতা বেশি। কিন্তু ফেসবুকে যারা এগুলো ছড়াচ্ছে, যেসব আইডি থেকে ম্যাসেজ আসছে, তাদের মধ্যে বহুজন ইংরেজিতে বাক্য লিখতে জানেন। আর এসব আইডির বহুগুলোই ভুয়া।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি বলেন, দেশের বাইরে থেকেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আরব আমিরাতের দুবাই থেকে পোস্ট দেওয়া হয়েছে। তিনি বিরোধী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
বাংলাদেশের যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি সরকারবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও জানান পুলিশ প্রধান।
জাবেদ পাটোয়ারি জানান, গুজব ছড়ানোর দায়ে এখন পর্যন্ত ১০৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলা হয়েছ ৩১টি। ব্যবহৃত ৬০টি ফেসবুক আইডি, ২৫টি ইউটিউব চ্যানেল এবং ১০টি নিউজ পোর্টাল বন্ধ করা হয়েছে। এসব আইডি ও চ্যানেল থেকে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার থেকে এ বিষয়ে সপ্তাহব্যাপী সচেতনতা সপ্তাহ শুরু হচ্ছে। গুজব প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ে পুলিশের সব ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।