‘আমি প্রাণ বাঁচাতে আদালতে পুলিশের শেখানো জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়েছি। আসামি শনাক্তের কথা বলে পুলিশ লাইনসে নিয়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। পরে রিমান্ডে নিয়েও আমার সঙ্গে আরও চরম অন্যায় আচরণ করেছে পুলিশ। তাদের শেখানো বক্তব্য আদালতে দিতে চাপ দেওয়া হয়। হুমকি-ধামকিও দেন তারা। ।’
আইনজীবীর কাছে এভাবেই তার ওপর জুলুম-নির্যাতনের বিবরণ দেন বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী ও মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। গতকাল তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম কারাগারে সাক্ষাৎ শেষে ফিরে এসে বলেন, ‘মিন্নি আমাকে বলেছেন জেরার নামে তার সঙ্গে জোরজবরদস্তি করা হয়েছে। তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে নিজেদের শেখানো কথা বলতে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।’ মিন্নি খুব অসুস্থ উল্লেখ করে চিকিৎসা প্রয়োজন বলেও জানান আইনজীবী।
এদিকে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তে পুলিশ নিরপেক্ষতা হারিয়েছে দাবি করে তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। এ হত্যার ইন্ধনদাতা হিসেবে নতুন করে বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকিকেও দায়ী করেন তিনি। অন্যদিকে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় রিফাত হত্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির অনেক সদস্য। নয়ন বন্ডদের মতো সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকদেরও বিচার দাবি করেন তারা।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়ে কোনো কথা বলেছেন কিনা- এমন প্রশ্নে আইনজীবী আসলাম বলেন, ‘মিন্নি আমাকে জানিয়েছেন, এ জবানবন্দি গ্রহণের জন্য পুলিশ তার সঙ্গে খুব জোরজবরদস্তি করেছে। তাকে শারীরিক নির্যাতন করেছে। মানসিক নির্যাতনও করেছে। পুলিশের শেখানো বক্তব্য স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন মিন্নি।’ তিনি বলেন, ‘মিন্নি তার ওই জবানবন্দি প্রত্যাহার চান। আমি তাকে বলেছি জেলারের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদনের নিয়মকানুন আমি তাকে বুঝিয়ে এসেছি।’
এক আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর : রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন গ্রেফতার আরিয়ান শ্রাবণের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। তার আইনজীবী গোলাম মোস্তফা কাদের আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে।