রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কাছে ফায়ার ফাইটিং সরঞ্জাম কেনার একটি ভুয়া চুক্তিপত্র তৈরি করে প্রায় ৮৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে দক্ষিণ কোরীয় একটি কোম্পানি। এ ঘটনায় হতভম্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন রাষ্ট্রীয় এ সেবা প্রতিষ্ঠান।
ওই চুক্তিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রের ই-মেইল, পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন নম্বর ও এনআইডি কার্ডসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও জাল করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিন সিন গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড ২০১৮ সালে ৮টি ফায়ার ফাইটিং ট্রাক কেনার নামে ৯টি ভুয়া নথি তৈরি করে চুক্তিপত্র সম্পাদনের নামে ৮৭ কোটি টাকা জালিয়াতির চেষ্টা করছে । সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হকের কাছে পাঠানো ডকুমেন্ট ও ই-মেইল যাচাই করে দেখা যায়, ফায়ার ফাইটিং ট্রাক ক্রয়সংক্রান্ত যাবতীয় যোগাযোগে একটি ভুয়া ই-মেইল অ্যাড্রেস ও কর্পোরেশনের নকল প্যাড ব্যবহার করা হয়েছে। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবর ওই কোম্পানিটি একটি ডিমান্ড নোটিশ পাঠায়।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের অ্যানেক্স প্লাজায় সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এ তথ্য তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি দাবি করেন, প্রাপ্ত ৯টি নথি যাচাই-বাছাই করে তার পাসপোর্ট জালিয়াতি ও ভুয়া ই-মেইল আইডি ব্যবহার, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তার ভুয়া নাম, পদবি ও স্বাক্ষর ব্যবহারের বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, আন্তর্জাতিক একটি চক্র জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধমে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপতৎপরায় লিপ্ত। চক্রটি কৌশলে আমার পাসপোর্ট, ভুয়া ইমেইল আইডি ও মোবাইল নম্বর এবং কর্পোরেশনের কর্মকর্তার ভুয়া নাম, পদবী ও স্বাক্ষর ব্যবহারের মাধ্যমে কোরিয়ান সিন সিন গ্লোবাল কোম্পানির কাছ থেকে ৮টি ফায়ার ফাইটিং ট্রাক কিনতে ৯টি ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেছে বলে জানতে পেরেছি।
মেয়র আরও বলেন, কোরিয়ান ওই কোম্পানি তৃতীয় কোনো পক্ষ দ্বারা প্রতারিত হয়েছে, নাকি কোম্পানির লোকজনই এ কাজ করেছে, তা যথাযথ তদন্ত ও তথ্য প্রমাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে জানা যাবে। তবে তারা আমার সঙ্গে ফোনে কখনও কথা বলেনি বা আমার ইমেইলে যোগাযোগও করেনি। বিষয়টি ভুয়া জানানোর পরও তারা সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে একাধিকবার অভিযোগ দাখিল করেছে। এতে আমার ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে। এটা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার গভীর অপচেষ্টা বলেও অভিহিত করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।