fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িআন্তর্জাতিকরাশিয়া যে কোন সময় ইউক্রেন দখল করবেঃ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রাশিয়া যে কোন সময় ইউক্রেন দখল করবেঃ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, রাশিয়া যে কোন সময় ইউক্রেন দখল করে নেবে বলে তিনি মনে করেন। বেলারুশে রাশিয়ার সৈন্য মোতায়েন এবং মহড়া অব্যাহত রাখা তাকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।তিনি বলেন, চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেনের পাশে বেলারুশে তিরিশ হাজার সৈন্য মোতায়েন রাখার ব্যাপারে মস্কোর সিদ্ধান্ত এমন সঙ্কেত দেয়।

ইউক্রেন দখল করে নেবার ব্যাপারে রাশিয়ান সেনা কমান্ডারদের আদেশ দেয়া হয়েছে বলে অজ্ঞাতনামা এক মার্কিন গোয়েন্দার পক্ষ থেকে তথ্য পাওয়ার পর এমন বক্তব্য দিলেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন। খবর বিবিসি বাংলার।

তবে ইউক্রেন বলছেন, আসন্ন হামলা সম্পর্কে এমন বক্তব্য ‘অসমীচীন’। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সি রেজনিকভ বলেছেন, কাল অথবা পরশু’র মধ্যেই হামলা হবে এমন কোন লক্ষণ নেই কারণ রাশিয়া এখনো সীমান্তে কোন ‘স্ট্রাইক গ্রুপস’ বা হামলা দল তৈরি করেনি।

ইউক্রেন দখল করে নেয়ার চেষ্টা সম্পর্কিত এসব দাবি অস্বীকার করে আসছে প্রতিবেশী রাশিয়া। অভিযানের আশঙ্কার মধ্যেই বেলারুশ বলেছে, রুশ সৈন্যদের সাথে তাদের যে যৌথ সামরিক মহড়া চলছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর কারণ ইউক্রেনে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

ইউক্রেনের পশ্চিমে ডনবাস অঞ্চলে দেশটির সরকারি বাহিনী এবং রাশিয়া সমর্থিত বিদ্রোহীদের মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও লড়াই অব্যাহত ছিল।

সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, “আমরা যা দেখছি তাতে মনে হচ্ছে যে বিষয়টি চরম গুরুতর। আমরা যেকোনো সময় হামলার দ্বারপ্রান্তে রয়েছি।”

“ট্যাংক এবং যুদ্ধবিমান সরে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা প্রতিটা মিনিট ব্যবহার করে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে দেখবো অগ্রসর হওয়া থেকে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ক্ষান্ত করা যায় কিনা।”

সিবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে বলছে, আক্রমণের আদেশ পাওয়ার পর রুশ কমান্ডারেরা কিভাবে হামলা চালাবে তার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইউক্রেনে হামলা শুরু হবে সাইবার আক্রমণ দিয়ে। তারপর স্থল বাহিনী রাজধানী কিয়েভ দখল করে নেয়ার আগে মিসাইল ও বিমান হামলা চালানো হবে।

অজ্ঞাতনামা মার্কিন গোয়েন্দা সিএনএনকে বলেছে, রাশিয়ান সেনাবাহিনীর অন্তত সত্তর শতাংশ এখন ইউক্রেন সীমান্তে অবস্থান করছে। হামলা করা যায় এমন দূরত্বে তারা অবস্থান করছে যা খুবই অস্বাভাবিক।

মার্কিন স্যাটেলাইট কোম্পানি ম্যাক্সার স্যাটেলাইটে ধারণ করা নতুন ছবি প্রকাশ করেছে। রাশিয়ান গ্যারিসন থেকে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে নতুন করে সেনা ও ভারি অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে বলে তাতে দেখা যাচ্ছে। এতে করে হামলার জন্য রুশ বাহিনী কতটা প্রস্তুত তার ধারণা পাওয়া যায়, এমনটাই দাবি করছে ম্যাক্সার।

অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁর মধ্যে আবারও ফোনে কথাবার্তা হয়েছে। তাদের মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। মি. পুতিন ডনবাস এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছেন।

ফ্রান্স বলেছে, দুই নেতা পূর্ব ইউক্রেনে একটি যুদ্ধবিরতি করার জন্য একসাথে কাজ করতে রাজী হয়েছেন।পুতিন চলমান উত্তেজনার জন্য পাল্টা ইউক্রেনকে দোষারোপ করেছে। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সৈন্য বেলারুশ ছেড়ে যাবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর প্রতি প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতিশ্রুতি আশাব্যঞ্জক। তবে “ইউক্রেন থেকে সেনা সরিয়ে রাশিয়াকে পিছু হঠার” ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।

ইউক্রেন-রাশিয়ার এই চলমান উত্তেজনার সূত্রপাত সেই ২০১৪ সালে যখন ইউক্রেনে রুশ-পন্থী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, রাশিয়া সৈন্য পাঠিয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রাইমিয়া দখল করে নেয়। একই সময়ে রাশিয়ার সাহায্যে জাতিগত রুশ বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বড় একটি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। সে সময় থেকেই বিদ্রোহীদের সাথে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর থেকে থেকে লড়াই চলছে যাতে ১৪ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে। দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলেও একে অপরের প্রতি তা ভঙ্গ করার অভিযোগ রয়েছে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments