ক্রীড়াক্ষেত্রেও রাশিয়ার উপরে আসছে নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল। রাশিয়ায় কোন ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা না আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। এ ছাড়া ইউক্রেনে সামরিক হামলার জের ধরে দেশটি থেকে দাবা অলিম্পিয়াড সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিদে। অনিশ্চয়তায় ফর্মুলা ওয়ান আয়োজনের পূর্বনির্ধারিত সূচিও।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল আয়োজনের সুযোগ হারানোর পর, ক্রীড়াঙ্গনে আরও বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেনে হামলার প্রতিবাদে, দেশটিতে সকল ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। সামরিক অভিযানে প্রত্যক্ষ সঙ্গী হওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে বেলারুশ-ও। খেলার মাঠে যেন একঘরে করা হচ্ছে তাদের।
শুধু তাই নয়, কোন বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাতেই যেন এই দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো ও পতাকা ওড়ানো না হয়, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর প্রতি সে অনুরোধও করেছে আইওসি। এ নিয়ে শেষ ১৪ বছরে তৃতীয়বারের মতো আইওসির নিষেধাজ্ঞার কবলে রাশিয়া। রাশিয়ার প্রতি সহানুভূতি দেখানোর কোন ইচ্ছাই নেই আইওসির।
এদিকে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াড সরিয়ে নেয়া হয়েছে রাশিয়া থেকে। ১৯০ দেশের অংশগ্রহণে চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরুর কথা ছিলো এই টুর্নামেন্ট। দুই সপ্তাহব্যাপী এই আসর আয়োজনে এরই মধ্যে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ।
রাশিয়ানরা বঞ্চিত হতে পারে গতির ঝড়ের সাক্ষী হওয়া থেকেও। সেপ্টেম্বর থেকে দেশটিতে শুরু হবার কথা ফর্মুলা ওয়ান। তবে বেশ কজন প্রতিযোগি ও পৃষ্ঠপোষক এই আয়োজনের বিরোধিতা করায় অনিশ্চিয়তায় এই টুর্নামেন্ট। রাশিয়ার সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজকরা জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতি বজায় থাকলে কোনোভাবেই এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে না সেখানে।
যদিও দেশটির ওপর এমন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে নাখোশ রাশিয়ানরা। রাজনীতির সঙ্গে খেলাধুলাকে জড়ানোয় ক্ষোভ জানিয়েছে তারা। ‘দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে খেলাধুলোর ওপর প্রভাব ফেলানো উচিত নয়। আমার ধারণা, খেলা মানে খেলা। রাজনীতি মানে রাজনীতি। খেলাকে রাজনীতিবিদদের ওপর নির্ভর করানোটা অনুচিত।’ বলছিলেন এক রাশিয়ান।
এদিকে আরেক রাশিয়ান মনে করেন পরিস্থিতি বদলাবে। ‘জীবন বহমান। সবকিছু বদলায়। এটাও বদলাবে। নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠে যাবে এবং মনোভাবও বদলাবে। আমি মনে করি, কর্তৃপক্ষ এমন কিছু করবে যাতে ক্রীড়াবিদদের প্রতি মানুষের চিন্তাধারণা বদলাতে সাহায্য করবে।’
রাশিয়ার ওপর বিশ্ব ক্রীড়া সংগঠনগুলোর বাড়তে থাকা চাপের পরবর্তী ধাপ হতে পারে ফিফার নিষেধাজ্ঞা। এরই মধ্যে দেশটির বিপক্ষে বিশ্বকাপ প্লে অফ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোল্যান্ড, সুইডেন ও চেক রিপাবলিক। ফলে ফুটবল বিশ্বকাপেও দেশটি অংশ নিতে পারবে কিনা, তা নিয়েও এখন ঘোর অনিশ্চয়তা। রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করার কথাও ভাবছে ফিফা।