ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও খেরসনে ফের হামলা শুরু করেছে রুশ সামরিক বাহিনী। মঙ্গলবার (১ মার্চ) সকালে এ খবর নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সোমবার বেলারুশে মস্কো-কিয়েভ আলোচনা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শহর দুটিতে রুশ হামলার দাবি করল ইউক্রেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাজধানী কিয়েভে ফের হামলা শুরু করেছে রুশ সেনারা। জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেন অব ইউক্রেন এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, কিয়েভের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। আক্রমণের ক্ষমতা কমে যাওয়া সত্ত্বেও শত্রুরা সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।
ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন, হামলা চালানোর সময় বেলারুশের উচ্চ প্রশিক্ষিত সামরিক ইউনিটগুলোকে সঙ্গে রাখার এবং বেলারুশের আকাশসীমা ব্যবহার করারও পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।
এর আগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছিল যে, ইউক্রেনে তারা এখনও বেলারুশের সেনা উপস্থিতির কোনো ইঙ্গিত পায়নি।
অন্যদিকে রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনেও হামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। ইউক্রেনের স্টেট সার্ভিস ফর স্পেশাল কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রোটেকশন তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছে, ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রুশ সেনারা বিমানবন্দর থেকে নিকোলায়েভ মহাসড়কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং সেখানকার একটি হিমাগারের কাছে জড়ো হচ্ছে।’
এর আগে বিবিসি জানিয়েছিল, খেরসন বিমানবন্দরের কাছে শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। খেরসনের আঞ্চলিক প্রশাসনও জানিয়েছে যে, রুশ সেনারা শহরটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে, তবে এখনও দখল নেয়নি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এরপর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ধ্বংস করে বিভিন্ন বিমানঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। হামলা থেকে বাঁচতে ইউক্রেন থেকে পালাচ্ছে লাখো মানুষ। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনারা।
এদিকে ইউক্রেনে হামলা চালানোর রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন পশ্চিমা দেশগুলো। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ান বিমান নিজেদের আকাশপথ নিষিদ্ধ করে। পাল্টা ব্যবস্থা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, কানাডাসহ ৩৬টি দেশের এয়ারলাইনসের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করে রাশিয়া।
যুদ্ধবিরতিতে আসতে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলারুশে প্রথমবার আলোচনায় বসে রাশিয়া-ইউক্রেনের প্রতিনিধই দল। তবে আলোচনায় কোনো সমাধান আসেনি। দুই দেশেই দ্বিতীয় দফা বৈঠকে বসতে হয়েছে।