fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িজাতীয়এসি বাসভাড়ার কোন আইন ও নীতিমালা নেইঃ অপূর্ব অধিকারী

এসি বাসভাড়ার কোন আইন ও নীতিমালা নেইঃ অপূর্ব অধিকারী

সচেতন বার্তার বিশেষ প্রতিবেদন- ২য় পর্ব  

২০১৭ সালে ঈদুল ফিতর পরবর্তী সময়ে রাজশাহীর জনৈক ব্যাবসায়ী ঢাকায় আসার জন্য গনপরিবহন প্রতিষ্ঠান ‘ন্যাশনাল ট্রাভেলস’ থেকে এসি বাসের একটি টিকেট ক্রয় করেন। টিকেটের মুল্য বাবদ ওই  প্রতিষ্ঠান এক হাজার তিনশত টাকা গ্রহন করে। সচেতন সেই ব্যবসায়ী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে ন্যাশনাল ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ  অধিদপ্তর, রাজশাহী কার্যালয় বরাবর ৩রা জুলাই ২০১৭ তারিখে অভিযোগ দায়ের করেন যার নংঃ ০৩, তাংঃ ০৩/০৭/২০১৭ ইং।

এই অভিযোগ দায়েরের পর একই বছরের ঈদুল আযহায় বাস টার্মিনাল আর গনপরিবহন প্রতিষ্ঠান কাউন্টার গুলোতে বিশাল বিশাল ব্যানার আর পোষ্টার দেখা যায়। যেগুলোতে লেখা ছিলো, “বিশেষ ছাড়ে মাত্র ৮০০ টাকায় ঢাকা-রাজশাহী বিলাসবহুল এসি বাসের টিকিট।’

উক্ত ব্যবসায়ী অভিযোগটি দায়ের করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ বিআরটিএ সংস্থাপন অধিশাখা প্রজ্ঞাপন তারিখ  ০৩ মে ২০১৬/২০শে বৈশাখ ১৪২৩  এর আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী।

উক্ত গেজেট প্রজ্ঞাপন অনু (ক) ডিজেল চালিত বাস-মিনিবাসের সর্বোচ্চ ভাড়া প্রতি যাত্রী প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ৩ পয়সা কমিয়ে সর্বোচ্চ  ১.৪২ টাকা  নির্ধারণ করা হয় এবং অনু (খ) এ বলা হয়েছে,  প্রস্তুতকারক/বিআরটিএ কতৃক অনুমোদিত আসন সংখ্যা কমিয়ে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য বাস-মিনিবাসের আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাস করা হলে উপরি-উক্ত অনুচ্ছেদ-ক অনুযায়ী আনুপাতিক হারে ভাড়া নির্ধারিত হবে সেক্ষেত্রে রুট পারমিট কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ/আরটিসি) হতে আনুপাতিক হারে ভাড়ার হার অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।

০৭/৮/২০১৭ তারিখে সেই অভিযোগের প্রথম শুনানীতে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারীর উপস্থিতিতে শুনানীকালেই অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অভিযোগকারীকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে হুমকি দেয়। যার কারনে অভিযোগকারী পরবর্তীতে ২৮/৯/১৭ তারিখ দ্বিতীয় শুনানীতে উপস্থিত হওয়ার আগে রাজপাড়া থানা, রাজশাহীতে সাধারন ডায়েরী করে দ্বিতীয় শুনানীতে অংশগ্রহন করেছিলেন।

প্রথম শুনানীর পর অভিযোগকারী বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি(বিআরটিএ) কতৃক আন্তঃজেলা ও দুরপাল্লার রুটে চলাচলকারী ডিজেল চালিত বাস-মিনিবাসের ভাড়ার চার্টে দেখেন, রাজশাহী-ঢাকা নন এসি বাসের ভাড়া ৪৩৩ টাকা যেখানে গণপরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো ৪৫০ টাকা করে আদায় করে।

এ বিষয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকা দৈনিক জনকন্ঠ, দৈনিক বার্তাসহ ও রাজশাহীর স্থানীয় সকল দৈনিক পত্রিকা ও ডজনখানেক অনলাইন নিউজ পোর্টালে “ন্যাশনাল ট্রাভেলস’র বিরুদ্ধে যাত্রী সেবার নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ” প্রধান শিরোনামে ২৯/৯/১৭ তারিখে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এ সময় অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী জানিয়েছিলেন, ‘অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে তাদের গ্রহণকৃত ভাড়ার (টাকার পরিমান) বিআরটিএ কতৃক অনুমোদনপত্র দাখিল করার জন্য।’

দৈনিক সচেতন বার্তাকে অভিযোগকারীর দেওয়া সকল তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যায়, গত ৪ই মে ২০১৬ ইং বাংলাদেশ গেজেট দ্বারা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে।

উক্ত প্রজ্ঞাপনের আলোকে বিআরটিএ কতৃক স্মারক নংঃ বিআরটিএ/ইঞ্জিঃ (ডি ডি-৩, আরপি)/১৯১/২০০৩(অংশ-১)-১৫৬৭ তে আন্তঃ জেলা ও দুরপাল্লার রুটে চলাচলকারী ডিজেল চালিত বাস-মিনিবাসের ভাড়ার চার্ট পূনঃ নির্ধারণ করে প্রেরণ প্রসঙ্গে। সূত্রঃ সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপণ নংঃ ৩৫.০০.০০০০.০২০.২৬.০০৫.১৬-১৬৩, তারিখ- ২০শে বৈশাখ ১৪২৩ বঙ্গাব্দ, ৩মে ২০১৬ খ্রিঃ উল্লেখ পুর্বক বলা হয়, উপরোক্ত বিষয়ে তাঁকে জানানো যাচ্ছে যে, সূত্রস্থ স্মারকে বর্নিত প্রজ্ঞাপণ অনুযায়ী আন্তঃ জেলা ও দুরপাল্লার রুটে চলাচলকারী ডিজেল চালিত বাস-মিনিবাসের ভাড়া যাত্রী প্রতি কিলোমিটারে ১.৪২ টাকা পূনঃ নির্ধারণ করা হয়েছে। সে মোতাবেক সওজ হতে প্রাপ্ত বিভিন্ন রুটের দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়ার চার্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুতকৃত ভাড়ার চার্ট (৩৬ পাতা) কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তাঁর নিকট এতদসংগে প্রেরন করা হলো।  ভাড়ার পরিমাণ কম-বেশির ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য তথ্য/প্রমানসহ এ দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে, তা সংশোধন এবং সূত্রস্থ স্মারকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠান বাস-মিনিবাসের আসন কমিয়ে আরামদায়ক ভ্রমণের ব্যবস্থা করলে, প্রমাণ সাপেক্ষে বিআরটিএ কর্তৃক আনুপাতিক হারে ভাড়া বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমতবস্থায়, আপনার সমিতি/এসোসিয়েশনভুক্ত সকল সংগঠনকে ভাড়ার চার্ট সরবরাহ পূর্বক সরকার কর্তৃক পূনঃ  নির্ধারিত হারে ভাড়া আদায়ের জন্য প্র‍্যয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হল।

ইহা ১৫ই মে ২০১৬ তারিখ হতে কার্যকর হবে। সংযুক্তি ভাড়ার চার্ট ৩৬ পাতা। যা মোঃ নূরুল ইসলাম, পরিচালক(ইঞ্জিঃ) স্বাক্ষরিত এবং মহাসচিব/সাধারণ সম্পাদক, বিআরটিসি ভবন(৬ষ্ট তলা)  ২১ রাজুউক এভিনিউ, ঢাকা। চেয়ারম্যান/সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশন, ২৫৭/ক আহসানউল্লাহ কমপ্লেক্স (৫ম তলা), বাগবাড়ী মিরপুর, ঢাকাসহ পুলিশ কমিশনার,  বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক সহ সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে।

১৮ই ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে রাজশাহীর উক্ত ব্যাবসায়ীর দায়ের করা অভিযোগের বিষয়ে আদেশ প্রদান করেন  জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজশাহী এর সহকারী পরিচালক, ও অভিযোগ নিস্পত্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপূর্ব অধিকারী।

 

তাঁর স্বাক্ষরিত আদেশে দেখা যায়, তিনি অভিযোগের তারিখ উল্লেখ করেছেন ০৩/০৮/২০১৭ প্রকৃতপক্ষে অভিযোগ দায়েরের তারিখ ০৩/০৭/২০১৭।

অভিযোগের কোথাও এসি বাসের কথা উল্লেখ না থাকলেও আদেশে তিনি উল্লেখ করেছেন রাজশাহী কর্তৃক এসি বাসে ঢাকা হতে রাজশাহী ভ্রমণের জন্য। প্রকৃতপক্ষে দায়েরকৃত অভিযোগ এ উল্লেখ ছিলো রাজশাহী হতে ঢাকা ভ্রমণের জন্য।

তিনি আদেশে আরও উল্লেখ করেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) স্মারক নাম্বার ৩৫.০০.০০০০.০০৩.১৩.৭৭০.২০১৪(অংশ-১)-৮৩, তারিখ ২৬-১১-২০১৭ মূলে এ দপ্তরকে অবহিত করা হয় যে, বিআরটিএ এসি বাস তথা আরামদায়ক সুবিধা প্রদানপুর্বক পরিচালিত গণপরিবহনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করে না; যেহেতু বিআরটিএ এসি বাস তথা আরামদায়ক সুবিধা প্রদানপুর্বক পরিচালিত গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করে না; যেহেতু সরকারের অন্য কোন কর্তৃপক্ষও এই ক্যাটাগরির সেবা প্রদানের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করেনা; যেহেতু এতদ্যবিষয়ে কোনো আইন, নীতিমালা ও  বিধিমালাও নেই; সেহেতু  বাস মালিকগণ নিজস্বভাবে দূরপাল্লার যাত্রী সেবা প্রদানের জন্য এসি বাসভাড়া নির্ধারণপুর্বক উক্ত সেবা প্রদান করে থাকেন। উল্লেখ্য, যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস মালিকগণ যে নিজস্বভাবে দূরপাল্লার যাত্রীসেবা প্রদানের জন্য এসি বাস ভাড়া নির্ধারণপুর্বক যাত্রী সেবা প্রদান করে থাকে সে বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়নি। সুতরাং, ন্যাশনাল ট্রাভেল্‌ প্রধান কার্যালয়, শিরোইল, বোয়ালিয়া, রাজশাহী কতৃক স্ব-নির্ধারণকৃত এসি বাস ভাড়া দাবি করে যাত্রী সেবা প্রদানের বিষয়টি ভোক্তা অধিকার আইন, ২০০৯ এর ৪০ ধারা অনুযায়ী ধার্যকৃত  মূল্যের অধিক মূল্যে সেবা বিক্রয়ের জন্য অপরাধ হিসেবে আমলযোগ্য নয়।

 

প্রসঙ্গত, আদেশ প্রদানকারী কর্মকর্তা আদেশে বিআরটিএ কতৃক প্রাপ্ত তথ্যের যে স্মারক নাম্বার উল্লেখ করেছেন তার কোন অনুলিপি/কপি বা প্রদত্ত আদেশের সাথে কোন তদন্ত প্রতিবেদন/ তাঁর প্রদত্ত আদেশের বক্তব্যের সমর্থনে কোন তথ্য-উপাত্ত সম্বলিত নথি সংযুক্ত করেন নাই বা প্রদান করেন নাই।

আদেশের পরবর্তী অংশে তিনি উল্লেখ করেছেন,অভিযোগকারীর আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন যে, নন-এসি বাসে ঢাকা টু রাজশাহী ভ্রমণের জন্য সরকার কর্তৃক ৪৩৩.২ টাকা অনুমোদন রয়েছে যা পরিবহন সংস্থা অথবা বাস মালিকগণ ৪৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে এবং কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সাধারন ভোক্তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য নন এসি বাসে চালক ব্যতীত ৫১সিট বিবেচনায় সরকার কর্তৃক অনুমোদন রয়েছে ৪৪৪ টাকা এবং নন এসি বাসে চালক ব্যতীত ৫১ সিট এর স্থলে ৪০ সিট বিবেচনায় ঢাকা টু রাজশাহী ভ্রমণের জন্য সরকার কর্তৃক আদায়যোগ্য ভাড়া ৪৭৮  টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অভিযোগকারী এই অভিযোগে চালক ব্যতীত সিটের কথা উল্লেখ করেননি এবং তিনি যে ৪৩৩.২/-টাকা উল্লেখ করেছেন তাও সঠিক নয়।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, তদন্তে দেখা গেছে যে নন এসি বাস গুলো চালক ব্যতীত ৩৬ থেকে ৪০ সিটের এবং তার সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া ৪৭৮ টাকার স্থলে ৪৫০ টাকা নিচ্ছেন। সুতরাং ন্যাশনাল ট্রাভেলস নন-এসি বাসে ভাড়া চালক ব্যতীত ৫১ সীট এর স্থলে ৪০সিট  বিবেচনায় ঢাকা টু রাজশাহী ভ্রমণের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আদায়যোগ্য ভাড়া ৪৭৮ টাকার স্থলে ৪৫০ টাকা  নেওয়ার বিষয়টি ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা অনুযায়ী ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে সেবা  বিক্রয়ের জন্য অপরাধ হিসেবে আমলযোগ্য নয়।

এক্ষেত্রে, আদেশ প্রদানকারী কর্মকর্তা তার তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের কোন সূত্রও উল্লেখ করেন নাই কিংবা তাঁর আদেশে প্রদত্ত তথ্যের সংশ্লিষ্ঠতায় কোন তথ্য-প্রমানের তথ্য-উপাত্ত কিংবা তদন্ত প্রতিবেদনও আদেশের সাথে সংযুক্ত করেন নাই।

অন্যদিকে, অভিযোগকারী তার অভিযোগের সমর্থনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গেজেট প্রজ্ঞাপণ ও তার আলোকে বিআরটিএ কতৃক জারিকৃত ভাড়ার যে তালিকা সরবরাহ করেছেন এবং আদেশ প্রদানকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজশাহী এর সহকারী পরিচালক, অপূর্ব অধিকারী গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সুষ্পষ্টভাবে প্রমানিত হয় যে তিনি ক্ষমতাশালী, বিত্তবান, প্রভাবশালী বাস-মালিক শ্রমিক সিন্ডিকেটের পক্ষে প্রভাবিত হয়ে দেশের প্রচলিত আইনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত আদেশ প্রদান করেছেন। যে আদেশের ফলে দেশের কোটি কোটি সাধারণ জনগন আর্থিকভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছেন এবং এখনো হচ্ছেন।

বিচারিক ক্ষমতার অধিকারী একজন সরকারী কর্মকর্তার এহেন পক্ষপাতদুষ্ট আদেশের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় থেকে শুরু করে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় শ্রুদ্ধাচার কমিটির সকল পর্যায়ে অভিযোগকারী উক্ত ব্যবসায়ী এই আদেশের বিষয়ে আবেদন জানিয়েও কোন প্রতিকার পান নি।

সর্বশেষ তার অভিযোগ ২০২১ সালের শেষের দিকে জিআরএস থেকে খারিজ করা হলে তিনি উচ্চ আদালতের দারস্থ্য হওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এই যদি হয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর নৈতিকতা তবে সাধারণ মানুষ সচেতন হয়ে অভিযোগ জানিয়ে কি করবে?

তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় নিত্যসামগ্রী দ্রব্যমুল্য যাতে কৃত্রিম সংকটে না বাড়তে পারে সেজন্য জনগণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। সচেতনতার ফলাফল যায় বিত্তশালী, ক্ষমতাবানদের ঘরে। সাধারণ জনগন সচেতনতার সুফল হিসেবে পান হয়রানি আর ভোগান্তি। মানুষ কি এই ভোগান্তি ডেকে আনতে সচেতন হবে?

অভিযোগকারী ওই ব্যাবসায়ী বলেন, মাননীয় সড়ক পরিবহণ ও নৌ সেতু মন্ত্রলায়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মহোদয় ১৯ শে জুন ২০১৭ তারিখে সচিবালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, ‘টার্মিনালে আমি যাত্রীদের কাছে জানতে চাইলে কেউ তো কিছু বলে না। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ এলেই আইঙ্গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রী মহোদয় ২৯ শে আগষ্ট ২০১৭ তারিখে এক বক্তব্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নিলেই কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমি আমার অভিযোগ সহ জাতীয় দৈনিক গুলো মন্ত্রী মহোদয়কে ১৫৪ টাকা ডাক মাশুল প্রদান করে অভিযোগ জানিয়েছিলাম।

“তিনি ব্যবস্থ্যা নিয়েছিলেন তবে সেই বিত্তশালী, ক্ষমতাবান পরিবহণ সিন্ডিকেটের পক্ষে। ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহণ আইনে সেই বিধিমালায় পরিবর্তন এনে যাতে ভবিয্যতে আমার মত অভিযোগ আর কেউ না আনতে পারেন।”

সাধারণ ভোক্তাগণ কৃত্রিম সংকট সৃষ্ঠি করে দ্রব্যমুল্য বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে যেখানে সচেতন হয়ে প্রতিবাদী ভূমিকা পালনের কথা, সেখানে তারা বলছেন, ‘এসব আমাদের সয়ে গেছে। এখন সবচেয়ে ভালো হয়, না খেয়ে থাকার অভ্যাস করা।’ সাধারণ জনগণ তথা ভোক্তাদের এহেন বক্তব্য প্রমাণ করে যেখানে শাষকগোষ্ঠী বিত্তবান, ক্ষমতাশালীদের কাছে জিম্মি সেখানে সাধারণ জনগণ পাঁঠার বলি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

সাধারন জনগণকে পাঁঠার বলি বানিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখা যায় না। এই উন্নয়নের ধারায় বিত্তশালী পুজি-পতিদের পতন অবশ্যম্ভাবী।  এদেশের খেটে খাওয়া নীপিড়িত সাধারণ জনগনের দোড়-গোরাতেই আসতে হবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments