fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িজাতীয়এসি বাসভাড়ার কোন আইন ও নীতিমালা নেইঃ অপূর্ব অধিকারী

এসি বাসভাড়ার কোন আইন ও নীতিমালা নেইঃ অপূর্ব অধিকারী

সচেতন বার্তার বিশেষ প্রতিবেদন- ১ম পর্ব 

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী রাজশাহীর জনৈক ব্যাবসায়ীর দায়ের করা গণ পরিবহণ প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ট্রাভেলস এর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের  অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেওয়া আদেশে বলেছেন, ‘দেশের গণপরিবহণ খাতে চালিত এসি বাসের ক্ষেত্রে ভাড়া সংক্রান্ত কোনো আইন, নীতিমালা ও  বিধিমালাও নেই। তাই বাস মালিকগণ নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী  দূরপাল্লার যাত্রী সেবা প্রদানের জন্য এসি বাসভাড়া নির্ধারণ করে থাকে।’ 

রাজশাহীর জনৈক ব্যাবসায়ীর দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৮ই ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে দেওয়া আদেশে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ,রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অভিযোগ নিস্পত্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপূর্ব অধিকারী উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

তিনি আদেশের একটি অংশে বলেন, “বিআরটিএ এসি বাস তথা আরামদায়ক সুবিধা  প্রদানপুর্বক পরিচালিত গণপরিবহনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করে না; যেহেতু বিআরটিএ এসি বাস তথা আরামদায়ক সুবিধা প্রদানপুর্বক পরিচালিত গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করে না; যেহেতু সরকারের অন্য কোন কর্তৃপক্ষও এই ক্যাটাগরির সেবা প্রদানের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করেনা; যেহেতু এতদ্যবিষয়ে কোনো আইন, নীতিমালা ও  বিধিমালাও নেই; সেহেতু  বাস মালিকগণ নিজস্বভাবে দূরপাল্লার যাত্রী সেবা প্রদানের জন্য এসি বাসভাড়া নির্ধারণপুর্বক উক্ত সেবা প্রদান করে থাকেন।”

দেশের শাষকগোষ্ঠী তথা সরকার যখন বিত্তবান, ক্ষমতাশীলদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে তখন দেশের সাধারণ জনগণ শুধু যে অসহায়ই হয়ে পড়ে তাই নয়, জনগণ দিশেহারা হয়ে যায়।

গত ২রা মার্চ বুধবার দেশের জাতীয় দৈনিক গুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় টিপু মুনশি সচিবালয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় জানিয়েছেন, ‘দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুত আছে, পণ্যের কোন ঘাটতি নেই।’ একইসাথে তিনি এই সতর্কবার্তাও দেন যে, ‘কৃত্রিম উপায়ে পণ্যের সংকট সৃষ্টি করে মূল্য বৃদ্ধি চেষ্টা করা হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।’

মন্ত্রী মহোদয় আরও বলেন, ‘ভোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকেও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করতে দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোকেও দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

অন্যদিকে, গণমাধ্যম গুলোতে ভিডিও সহ প্রকাশিত প্রতিবেদন এ দেখা যায়, রাজধানীর অনেক মুদি দোকানে মিলছে না সয়াবিন তেল। যেসব দোকানে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে, তা বাড়তি দামে নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সুযোগ বুঝে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। কাটছেন ভোক্তাদের পকেট।

আরও পড়ুনঃ তেলের তেলেসমাতিতে কাটছে ভোক্তার পকেট!

শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারেও সয়াবিন তেলের সংকটের খবর পাওয়া গেছে। দাম ঠেকেছে ২০০ টাকায়। কোম্পানি তেল দিচ্ছে না—অভিযোগ পাইকারদের। পাইকারি-খুচরা বিক্রেতাদের কারসাজি, বলছে কোম্পানি। সরকারি নজরদারি বাড়ানোর দাবি ভোক্তাদের।

সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে ক্রেতা তথা ভোক্তাদের পকেট কাটার এই পদ্ধতির বিষয়ে একাধিক ক্রেতার মন্তব্যে স্পষ্টতই সেই অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়েছে। সফিউজ্জামান নামের এক ক্রেতা গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে অস্বাভাবিক করে ফেলেছেন। জনগণকে বোকা বানাতে মাঝে মধ্যে সরকারের মন্ত্রীরা হুমকি-ধামকি দেন। কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।’

ফারুক আহম্মেদ নামে আরেকজন বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের হিসাব-নিকাশ দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। এসব আমাদের সয়ে গেছে। এখন সবচেয়ে ভালো হয়, না খেয়ে থাকার অভ্যাস করা।’

সাধারণ ভোক্তাদের অতিরিক্ত মুল্য গ্রহনের কারণে সচেতন হয়ে যেখানে প্রতিবাদ করার কথা, সেখানে যখন কোন  ভোক্তা, সয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে, না খাওয়ার অভ্যাস করার কথা বলেন তখন, তার অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশই ফুটে ওঠে। যার অন্যতম কারণ শাষকগোষ্ঠীর দুঃশাষন এর যাতাকল, যার কারন এক শ্রেনীর প্রভাবশালীদের কাছে শাষকগোষ্ঠীর জিম্মিদশা।

দেশের বিদ্যমান আইনে যাই থাকুক না কেন রায় যখন প্রভাবশালীদের পক্ষেই যায় তখন সাধারণ ভোক্তারা অসহায়, নিরুপায় আর দিশেহারা হওয়াটাই অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। সেই চিত্রই ফুটে উঠেছে ভোক্তাদের মন্তব্যে।

কিছুদিন আগেও যখন দেশে ডিজেলের মুল্য বৃদ্ধির ফলে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সংগঠন ভাড়া বৃদ্ধির দাবি তুলে ধর্মঘটে গিয়ে শাষকগোষ্ঠী তথা সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠকে বসে তখনও সাধারণ জনগন দেখেছে সরকার এই সংগঠনের দাবি মানতে গিয়ে সাধারণ জনগনের স্বার্থকে কতটুকু মুল্যায়ন করেছে। যেখানে শাষকগোষ্ঠীর জিম্মিদশা সেখানে সাধারণ জনগনের প্রতিবাদের ভাষা মুখ থুবড়ে পড়াটাই স্বাভাবিক।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য সাধারণ নেতৃত্বে উন্নয়ন অর্থনীতিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করে বাংলাদেশকে একটি প্রগতিশীল, প্রযুক্তিভিত্তিক, উন্নত ও মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে নিমগ্ন।

কিন্তু এই উন্নয়ন যাতে শুধু ক্ষমতাশালী বিত্তবানদের উন্নয়ন না হয়। এই উন্নয়ন যাতে গণ মানুষের উন্নয়ন হয়। এই উন্নয়নের অংশীদার যাতে ক্ষেত-মজুর, মেহনতী মানুষেরাও হয়। সাধারণ জনগনকে আর যেন পাঁঠার বলি হতে না হয়। সেদিকে দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments