খুলনার ফুলতলা এমএম কলেজের শিক্ষার্থী সৈয়দ আলিফ রোহান হত্যায় বহিষ্কৃত দুই ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্ত ও শেখ আবু হাসনাতকে এখনো গ্রেফতার করেনি পুলিশ। উপরন্তু মামলা থেকে তাদের বাঁচাতে তদবির শুরু করেছেন প্রভাবশালীরা।
জানা যায়, হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া তাছিন মোড়ল আদালতে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে হাসিবুল ইসলাম শান্তর দেওয়া ছুরি দিয়েই সে আলিফ রোহানের শরীরে বুকে-পিঠে আঘাত করেছে। আর হাসনাত আগে থেকেই ওই এলাকায় বখাটে কিশোর-তরুণদের জড়ো করে গ্যাং গড়ে তুলেছেন।
আলিফ রোহান কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্ত ও শেখ আবু হাসনাতকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। হাসিবুল ইসলাম শান্ত ফুলতলা এমএম কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি এবং আবু হাসনাত ফুলতলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এদিকে গত শনিবার খুলনা শিববাড়ি মোড়ে আলিফ রোহান হত্যা মামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। তারা কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে প্রভাবশালীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। ফুলতলা সদর ইউপি সদস্য মোল্লা ফারুক হোসেন জানান, হাসনাত-শান্ত-দীপ্তর নেতৃত্বে গ্যাং রয়েছে। তারা মাদক ব্যবসায় জড়িত ও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে আড্ডা, ইভটিজিং করত। রাজনৈতিকভাবে প্রশ্রয় দেওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
অ্যাডভোকেট কাজী তারিক হাসান মিন্টু বলেন, হত্যার ঘটনায় জড়িতদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যদি দ্রুত মামলার আসামি ও নেপথ্যে থাকা গডফাদারদের গ্রেফতার করা না হয় তাহলে অনশন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
জানা যায়, ফুলতলা রহমানিয়া এলিমেন্টারি স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সময় ইভটিজিং ও হট্টগোলের প্রতিবাদ করায় রোহানকে হত্যার পরিকল্পনার করা হয়। ৩১ মার্চ দুপুরে ফুলতলা এমএম কলেজ ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আলিফ রোহান নিহত হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সৈয়দ আবু তাহের বাদী হয়ে ফুলতলা থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ এ পর্যন্ত হত্যার ঘটনায় দীপ্ত সাহা, তাছিন মোড়ল ও সাব্বির ফরাজীকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে দীপ্ত সাহা ও তাছিন মোড়ল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আসামিরা যত প্রভাবশালী হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।