ভারতে কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় পুলিশ সদস্যের এলোপাথাড়ি গুলিতে এক নারী পথচারী নিহত হয়েছেন। পরে ওই পুলিশ সদস্য নিজেও গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন থেকে প্রায় ২০-২৫ মিটার দূরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কলকাতা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
চোদুপ লেপচা নামে ওই পুলিশ সদস্য পঞ্চম ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন। তিনি তিন দিন আগে ডেপুটি হাইকমিশনের বাইরের আউটপোস্টে নিরাপত্তার দায়িত্বে যোগদান করেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন থেকে একটু দূরে লোয়ার রেঞ্জ রোডে দিকভ্রান্ত হয়ে ঘুরতে থাকেন চোদুপ লেপচা নামে ওই পুলিশ সদস্য। এ সময় স্থানীয় এক সহকর্মীর বাসার খোঁজ করতে থাকেন তিনি। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে জানান এই নামে কোনো পুলিশ সদস্য এখানে বাস করেন না।
এক সময় তিনি হঠাৎ করেই তার ব্যবহৃত রাইফেল থেকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। এ সময় মোটরসাইকেলে আসা এক নারীর দেহে গুলি লাগলে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। এছাড়াও গুলি মোটরসাইকেল চালকের গায়ে লাগলে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নিহত নারী পথচারীর পরিচয় জানা যায়নি।
এরপর আবারও ওই পুলিশ সদস্য এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে সরে যান। এক সময় ওই পুলিশ সদস্য তার গলায় নিজের রাইফেল ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই পুলিশ সদস্য অন্তত ১৫ থেকে ১৬ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে।
রইস আহমেদ নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘নিহত ওই পুলিশ সদস্য বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। হঠাৎ করেই তিনি নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করেন। তাতে এক নারী পথচারী বাইক থেকে পড়ে যান এবং ঘটনাস্থলে মারা যান। তার সাথে থাকা চালক আহত হয়েছে। এরপর গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই পুলিশ কর্মী। সে কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ রাউন্ড গুলি চালায়।’
তিনি আরো জানান, ‘জুমার কারণে স্থানীয় মুসলিমরা তখন মসজিদে ছিলেন। ফলে ওই এলাকায় অন্যদিনের মতো এতো জনসমাগম ছিল না, না হলে আরো বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’
জানা গেছে, নিহত ওই পুলিশ কর্মী মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে এ রকম একজন পুলিশ কর্মীকে কেন বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের মতো হাইপ্রোফাইল জোনে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হল।
এ ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় স্থানীয় কড়েয়া থানার পুলিশ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠীসহ কলকাতা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এতে পুরো এলাকাটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। দিনে দুপুরে এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পার্ক সার্কাস এলাকায়।