চলন্ত প্রাইভেটকারের দরজা খুলে পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন এক ব্যক্তি। নুরুজ্জামান (৩৮) নামের ওই ব্যক্তি সোমবার দুপুরে পদ্মা সেতুর উপর থেকে ঝাঁপ দিলেও রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নদীতে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নুরুজ্জামানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার কাঁচপুর এলাকায়। ঢাকার ডেমরা এলাকার একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি।
জানা গেছে, জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে না পেরে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন নুরুজ্জামান।
গাড়িতে নুরুজ্জামানের পাশে থাকা ওমর ফারুক এক ব্যক্তি জানান, আমার সঙ্গে প্রায় চার বছরের সম্পর্ক নুরুজ্জামানের। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। তবে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে অনেক ভালোবাসতেন।
কাঁচপুর এলাকায় তিনি দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ঝাঁপ দেওয়ার আগে সেতুতে অবস্থানকালে নুরুজ্জামান মোবাইলে নিজের ভিডিও চালু করে কথা বলছিলেন। তিনি শেখ মুজিবকে ভালোবাসেন, ফুল দিতে পারেননি তাই কষ্ট পেয়েছেন এ কথা বলছিলেন।
ওমর ফারুক আরও জানান, তারা সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান সকাল সাড়ে ১০টায়।
এরপর সেখানে ২ ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন চেষ্টা করি ফুল দিতে। কিন্তু তাদের কাছে কোনো কার্ড না থাকায় তারা ফুল দিতে পারেননি। এরপর সেখান থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা করেন। সেতুতে অবস্থানকালে গাড়িটি কম গতিতে চলছিল। তখন নুরুজ্জামান গাড়ি থামাতে বলেন।
গাড়ি না থামালে তিনি কিছু না বলেই দরজা খুলে সেতু থেকে ঝাঁপ দেন। এরপর ৯৯৯ এ কল দিয়ে বিষয়টি তারা জানান।
মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, এক লোক পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। আমরা এখনও তাকে পাইনি। বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল না দিতে না পেরে তিনি সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রকম কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফ হোসেন জানান, রবিবার রাতে টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার জন্য একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করেছিলেন নুরুজ্জামান। আজ ভোরে ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তিকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। কিন্তু ফুল দেওয়ার জন্য অনুমতি কার্ড না থাকায় সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পদ্মা সেতু দিয়ে ফেরার পথে চলন্ত গাড়ির দরজা খুলে ঝাঁপ দেন তিনি।