ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে টনপ্রতি পাম তেল বিক্রি হয়েছিল প্রায় এক হাজার ৭০০ ডলারে। মালয়েশিয়ার সকারের শুল্কছাড়ের কারণে এখন সেই পাম তেল বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ডলারের কিছু কমে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিনিময়মূল্য স্থিতিশীল না হওয়ায় দেশের বাজারে এর পুরোপরি সুফল মিলছে না।
তেলের দামের আন্তর্জাতিক বাজার যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে, করোনা মহামারির সময়ে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে যে দামে পাম তেল বিক্রি হয়েছিল, চলতি আগস্ট মাসেও সেই দামে তেল কিনে আমদানি করতে পারছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।
এখন বিশ্বজুড়ে পাম তেল কিনতে কোনো সংকট নেই; সরবরাহে কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই।
জানতে চাইলে এস আলম গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী সালাহ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাম তেলের আন্তর্জাতিক দর কমলে কী হবে? ৮৮ থেকে ৯২ টাকার ডলারে কেনা পাম তেল দেশে আসার পর দেখা গেল ১১০ থেকে ১১২ টাকা নিচ্ছে। এই বাড়তি দর তো তেলের দামের সঙ্গেই যোগ হবে। ফলে সুফল মিলবে কিভাবে?’
কয়েক মাস ধরেই দেশের পাইকারি বাজারে পাম তেলের দাম কমতির দিকে ছিল। সরকার নির্ধারিত দরের চেয়েও কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর পণ্য পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে পাম তেলের বাজারে। গত রবিবার প্রতি মণ পাম তেল বিক্রি হয়েছিল ছয় হাজার টাকায়, যা জুলাই মাসে ছিল পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু গতকাল দাম কিছুটা কমেছে খোলা পাম তেলের।
জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জ ভোজ্য তেলের পাইকারি বিক্রেতা আরএম এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে কম দামে আমরা পাম তেল পাইকারি বাজারে বিক্রি করছি এখন। সরকারি হিসাবে মণপ্রতি পাম তেল বিক্রির নির্ধারিত দর পাঁচ হাজার ৭৮০ টাকা। আজ (গতকাল) বিক্রি করছি সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দরে। কয়েক দিন আগে অবশ্য দাম বেড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এখন সেটি কমে সিটি পাম তেল পাঁচ হাজার টাকা এবং এস আলম পাম তেল সাড়ে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বাজারে সরবরাহ কম থাকায় আগের মতো সেই বেচাকেনা নেই। ’
জানতে চাইলে মালয়েশিয়ান পাম অয়েল প্রমোশন কাউন্সিলের সাবেক আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (বাংলাদেশ ও নেপাল) এ কে এম ফখরুল আলম বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর মার্চে এই পাম তেল বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ৭০০ ডলারে।
মালয়েশিয়া সরকারের শুল্কছাড়ের কারণে এখন সেই পাম তেল বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ডলারের কিছু কমে। অবশ্য ইন্দোনেশিয়ার পাম তেল ৯৫০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। এই তেল সেপ্টেম্বরে জাহাজীকরণের উপযোগী। ফলে আগস্টে বুকিং দিলেই সেই পাম তেল সেপ্টেম্বরে দেশে আসার সুযোগ আছে। তিনি বলেছেন, চলতি ২০২২ সালে যত পাম তেল আমদানি করা হয়েছে, তার ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাকিটা এসেছে মালয়েশিয়া থেকে।