১৪ জুলাই রাতে চা খাওয়ার জন্য বাড়ির পাশের একটি বাজারে যান ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রামের নূর ইসলাম চৌধুরী (৪২)। সে রাতের পর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। কয়েক দিন ‘খোঁজাখুঁজি’র পর নূর ইসলামকে না পেয়ে ২৭ জুলাই ফরিদপুরের আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন তাঁর স্ত্রী আন্না বেগম (৩৫)।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তাঁদের গ্রামেরই কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর স্বামীকে ‘হত্যার পর লাশ গুম’ করে রেখেছেন। মামলায় তিনি রাঙ্গারদিয়া গ্রামের ১৪ জনকে আসামি করেন। আদালত ওই হত্যা মামলার তদন্ত করে সালথা থানাকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলে। সে অনুযায়ী থানা থেকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হোসেনকে। তিন সপ্তাহের পুলিশি তদন্তের পর বেরিয়ে আসে, নূর ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি আসলে মারা যাননি। গ্রামের এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করায় মারধরের শিকার হয়ে তিনি নিজেই আত্মগোপনে চলে যান। বিষয়টি তাঁর স্ত্রীও জানতেন। ঘটনাকে অন্যদিকে নিতে তিনি হত্যা মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে আন্না বেগম বলেছিলেন, তাঁর স্বামী একজন দরিদ্র কৃষক। আসামিদের সঙ্গে জমিজমা ও গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বিরোধ চলছিল। কিছুদিন আগে গাছ কাটা নিয়ে মামলার এক আসামির সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিরোধ হয়। এরপর ১৪ জুলাই রাত নয়টার দিকে তাঁর স্বামী স্থানীয় স্লুইসগেট বাজারে চা পান করতে গিয়ে বাড়ি ফেরেননি। তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নূর ইসলামকে লুকিয়ে রেখে তাঁর স্ত্রী মিথ্যা মামলা করেছিলেন। আমরা তাঁকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে শনিবার আদালতে পাঠিয়েছি। আদালত তাঁকে পরিবারের জিম্মায় দেন। এখন আমরা নূর ইসলামের স্ত্রী আন্না বেগমকে খুঁজছি। মিথ্যা মামলা দেওয়ায় তাঁকে আইনের আওতায় আনা হবে।’