পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রোববার রাজবাড়ীতে শাহিন খান (২৫) নামে এক যুবকের দুই হাত ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে বিচ্ছিন্ন করেছে দূর্বৃত্তরা। তাকে গুরুতর অবস্থায় রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে এবং পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে পুঙ্গ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গুরুত্ব আহত শাহিন খান রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের হাসেম খানের ছেলে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সদরের কল্যানপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান এর ছেলে শাহিন বারীকে (৩০) পুলিশ সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তার করেছে। সে ওই মামলার এজাহারভুক্ত ৩নং আসামী। পরে পুলিশ তার দেখানো মতে কব্জি কাটায় ব্যবহৃত ৩টি ছুরি উদ্বার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেল তিনটার দিকে শাহিনকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কল্যাণপুর মহিলা মাদ্রাসার পাশে নিয়ে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে তার দুই কুনুইয়ের উপর থেকে কেটে ফেলে উল্লাস করে দৃর্বৃত্তরা। এসময় শাহীনের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
রাজবাড়ীর কল্যাণপুরে মাদক ব্যবসায়ে বাধা দেয়ায় মৎস্য খামারি শাহিন খানের (৩০) দুই হাত দুর্বৃত্তরা কেটে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার বিচার দাবি করে একটি পলিথিনের ব্যাগে ছেলের কাটা দুই হাত নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শাহিনের বাবা হাশেম খান। রোববার জেলা সদরের আলিপুরে এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে শাহীনের বাবা একটি ব্যাগে শাহীনের কাটা দুই হাত নিয়ে বিচারের দাবিতে সোমবার সকালে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় ও সদর থানায় যান। তার অভিযোগ, এলাকায় মাদকসেবী ও মাদক ব্যাবসায়ীদের এসব অবৈধ কাজ করতে নিষেধ করায় কাল হয়েছে শাহিনের। এ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত ইসমাইল ও শাহীনের বিরুদ্ধে থানায় মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে বলেও তিনি জানান। তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাও রয়েছে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি শাহীনের পরিবারের রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম (বার) জানান, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত ইসমাইলের আরেক সহযোগী শাহীনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে শাহিন খানের বাবা ৫ জনকে আসামী করে সদর থানায় মামলা করেছেন। এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হবো।