বাংলাদেশ ও ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক জোরদার করাই প্রাধান্য পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে। তেমন আলোড়ন করা কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না হলেও বর্তমান বিশ্ব ও আঞ্চলিক বাস্তবতায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষামূলক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের রূপরেখা তৈরি হবে এই সফরে।
প্রতিবেশী দুই দেশের বাণিজ্য এগিয়ে নিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে এবারের সফরে। ইতোমধ্যে দুই দেশের পক্ষ থেকে সফরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলেও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি এখনো চলছেই। ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দরে তাঁর আগমনে স্বাগত জানাবেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
সফরে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির দেওয়া রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেবেন। পাশাপাশি তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর আজমির শরিফে হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করবেন। সেদিন বিকালে তিনি দেশে ফিরবেন। দ্বিপক্ষীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর বেশ কয়েকটি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এবারের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় থাকা সমঝোতা স্মারক ও নবায়ন তালিকার মধ্যে রয়েছে-দুই দেশের স্টাফ কলেজের মধ্যে সহযোগিতা, বিচার বিভাগীয় সহযোগিতা ও কুশিয়ারা নদীর পানি উত্তোলন নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এ ছাড়া নবায়নের মধ্যে রয়েছে ব্লু-ইকোনমি নিয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বাংলাদেশ টিভি ও প্রসার ভারতীর মধ্যে সমঝোতা স্মারক। এবারের সফরে রূপসা নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজ হস্তান্তরসহ আরও প্রকল্প উদ্বোধন হতে পারে।পাশাপাশি প্রাধান্য পেতে যাচ্ছে, উপ-আঞ্চলিক যে কোনো পরিস্থিতিতে দুই দেশের অবস্থান, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বিরোধের উদ্ভূত পরিস্থিতি। স্থিতিশীলতার স্বার্থে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হতে পারে।
জানা যায়, প্রায় তিন বছর পর প্রধানমন্ত্রী এবারের ভারত সফর করতে যাচ্ছেন। যদিও দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের কোনো কমতি নেই, তার পরও বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের আগে এ ধরনের ভিভিআইপি সফর আর আয়োজিত নাও হতে পারে। এ কারণেই এই সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দুই দেশের পক্ষ থেকেই।