সাভারের নবীনগর থেকে পাটুরিয়াগামী এসবি লিংক বাসে ৪০ টাকার ভাড়া ৪০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আজ (৯ আগস্ট) দুপুরে এসবি লিংক-এর মানিকগঞ্জগামী যাত্রী তন্ময় সাংবাদিকদের বলেন, “আমার কাছ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে গাড়িতে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই। অথচ এই ভাড়া ৪০ টাকা।”
একই অবস্থা চলছে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এবং ঢাকার চিটাগাং রোডে।
নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়াগামী বাস নীলাচল পরিবহনের কয়েকজন যাত্রীর কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাইনবোর্ড থেকে পাটুরিয়াগামী যাত্রী মো. মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, “স্বাভাবিকভাবে এই রুটে ১৩০-১৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। তবে আজ আমার হাতে ৩০ টাকার টিকেট ধরিয়ে দিয়ে ৫০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-পাটুরিয়া, ঢাকা-সাভার, ঢাকা-আব্দুল্লাহপুর, ঢাকা-মাগুরা, ঢাকা-সাতক্ষীরা, ঢাকা-ফরিদপুর, ঢাকা-কালিয়াকৈর, ঢাকা-ধামরাই, ঢাকা-গাজীপুর এসব রুটের প্রায় সব বাস থেকেই এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘরে ফিরতে সাভার ও নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে সেসব যাত্রী অপেক্ষমাণ, সেসব যাত্রীদের কাছ থেকে পাঁচ থেকে সাত গুণ ভাড়া হাঁকিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে ইঞ্জিন কভারে সিট কিংবা দাঁড়িয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে বাসগুলো।
এদিকে, চিটাগাং রোড থেকে মানিকগঞ্জগামী আরেকজন যাত্রী মাসুদ রানার কাছ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া নেয় নীলাচল পরিবহন। প্রকৃত ভাড়া হলো ১৩০ টাকা।
নীলাচল পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব ১১-৪৪১৩) -এর সুপারভাইজার কাউসার (প্রকৃত নাম নয়) কাছে জানতে চাওয়া হলে সে জানান, “আমাগোর পুলিশরে চান্দা দিতে হয়, শ্রমিক ইউনিয়নে জিপি ক্যাইটা লয়, সরকারের উপর মহল পর্যন্ত এই ভাগ পৌঁছে যায়।”
এ কারণেই যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ৩০ টাকার টিকেট দেওয়ার ব্যাপারে জিগ্যেস করা হলে হৃদয় জানায়, “এটা উপরের অর্ডার। তবে ৩০ টাকার টিকেট যাত্রীদের দেওয়া হলেও সেখানে ‘পাটুরিয়া থেকে মানিকগঞ্জ’ লেখা আছে।”
ধামরাই উপজেলার শেষপ্রান্তে বারোবাড়িয়া ওয়েট স্কেলে গাড়ি থামিয়ে একজন লোককে ২,৫০০ টাকা চাঁদা দিতে দেখা যায় নীলাচলের এক সুপারভাইজারকে।
নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে কোনো ট্রাফিক সার্জেন্টকে দেখা যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে একজন ট্রাফিক পুলিশকে পাওয়া যায়। যার ব্যাচে নাম লেখা রয়েছে শাহীন। তাকে যানবাহনের ভাড়ার অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, “ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ করুন। ৯৯৯-এ ফোন করুন বা মন্ত্রণালয়ে জানান। আমি এ ব্যাপারে কিছু করতে পারবো বা বলতেও পারবো না।”
তার কর্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ট্রাফিক সার্জেন্টকে জিগ্যেস করুন।” তিনি কোথায়?- এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহিন বলেন, “উনি (ট্রাফিক সার্জেন্ট) রেস্টে আছেন। এখন আমার (শাহীনের) ডিউটি শেষ ভাই, আমি চললাম।”
ভাড়া নৈরাজ্যের পাশাপাশি ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ হিসেবে রাস্তায় রয়েছে অস্বাভাবিক যানজট।
আজ দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে মানিকগঞ্জের গোলড়া থেকে পাটুরিয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা যানজটের কারণে স্থবির হয়ে ছিলো৷ যান চলাচল ব্যবস্থা ছিলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
উল্লেখ্য, আজ থেকে ঈদের ছুটি হওয়ায় গ্রামে যাচ্ছেন শহরের মানুষ। কিন্তু, পথের বিড়ম্বনায় বিরক্ত হতে দেখা গেছে তাদের।