খুলনা রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) থানা হাজতে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে জিআরপি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
আদালতের নির্দেশে খুলনা জিআরপি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উছমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত রাতে জিআরপি থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
রেলওয়ে পুলিশের কুষ্টিয়া সার্কেলের এএসপি ফিরোজ আহমেদ মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় ওসি উছমান গণি, ঘটনার রাতের ডিউটি অফিসার ও অজ্ঞাত তিনজন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার (৭ আগস্ট) খুলনা রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) থানায় নারীকে গণধর্ষণ ও পরে ফেনসিডিল মামলায় আদালতে চালানের অভিযোগের ঘটনায় ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি পাঠান ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হককে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়।
খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশে ২০১৩ সালের ‘হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে’ মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে (মামলা নং ০৩)।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর বড় বোন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তাঁর বোনের শ্বশুরবাড়ি সিলেটে। বাপের বাড়ি খুলনার ফুলবাড়ী গেট এলাকায়। তাঁদের মা খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। মাকে দেখতে তাঁর বোন খুলনায় আসছিলেন। তিনি নিজেও অসুস্থ থাকায় বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) যশোরে ডাক্তার দেখাতে যান। পরদিন শুক্রবার খুলনাগামী কমিউটার ট্রেনে আসার সময় ফুলতলা এলাকায় জিআরপি পুলিশ প্রথমে তাঁকে মোবাইল ফোনসেট চুরির অপরাধে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে জিআরপি পুলিশের ওসি ওসমান গনি পাঠান তাঁকে ধর্ষণ করেন। এরপর আরো চার পুলিশ ধর্ষণ করে। পরদিন শনিবার পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ তাঁকে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।
রবিবার আদালতের নির্দেশে ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে ওই দিন পরীক্ষা হয়নি। গত সোমবার একই হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত ২ আগস্ট রাতে এক নারীকে জিআরপি থানার মধ্যে ওসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য গণধর্ষণ ও মারধর করে। পরে ওই নারী বিষয়টি আদালতে অভিযোগ করেন। ৩ আগস্ট আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং তার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে গত ৫ আগস্ট তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। তবে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও জানা যায়নি।