fbpx
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
বাড়িঅন্যান্যকর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের হিড়িক

কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের হিড়িক

‘এশিয়ান সামিট অন এডুকেশন অ্যান্ড স্কিলস’ সম্মেলনে অংশ নিতে ১৯ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে যাচ্ছেন একজন প্রতিমন্ত্রী। সঙ্গে থাকবেন তাঁর একান্ত সচিবও (পিএস)। ২৩ সেপ্টেম্বর সম্মেলন শেষে দেশে ফিরবেন তাঁরা। তাঁদের দুজনের সম্মেলনসংক্রান্ত যাবতীয় খরচ বহন করবে ওই সম্মেলনের আয়োজক সংস্থা।

একইভাবে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমর্থনে অনুষ্ঠেয় এক স্টাডি ট্যুরে অংশ নিতে ২৩ অক্টোবর জার্মানি যাচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুই অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে নয় সদস্যের প্রতিনিধি দল। এ দলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ইআরডি ও রোহিঙ্গা সেলের কর্মকর্তাও রয়েছেন। ৩০ অক্টোবর তাঁরা দেশে ফিরবেন।

এ ছাড়া ৬ থেকে ১২ অক্টোবর ‘অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স ট্রেনিং’য়ে অংশ নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের চার কর্মকর্তা ইতালি যাচ্ছেন। এ ভ্রমণের বিষয়ে গতকাল জারি করা আদেশে বলা হয়েছে- ইতালি সফরের যাবতীয় খরচ বহন করবে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী ‘মেসার্স সরকার কবির আহমেদ’।

২৬ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় ‘অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স ট্রেনিং’য়ে অংশ নিতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগের অন্য একজন যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে সিলেট সিটি করপোরেশনের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তাঁদের খরচ জোগাবে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘বাংলা টেক লিমিটেড’।

এসব শুধু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বা স্থানীয় সরকার বিভাগ নয়, অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের চিত্র। এখন সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের খরচ বা ব্যয়ভার বহন করছে বিভিন্ন দাতা সংস্থা বা আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

চার মাস আগে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। ১২ মে অর্থ বিভাগের জারি করা পরিপত্রে বলা হয়েছিল- ‘করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষা সফর, এপিএ এবং ইনোভেশনের আওতামুক্ত ভ্রমণ ও ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। এ আদেশ উন্নয়ন বাজেট ও পরিচালন বাজেট উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। অবিলম্বে আদেশটি কার্যকর হবে।’

এ নির্দেশনা জারির পরও থেমে নেই সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ। আগের মতোই নানা কারণ দেখিয়ে বিদেশ ভ্রমণে ব্যস্ত সরকারি চাকুরেরা। বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রতিটি আদেশে উল্লেখ করা হচ্ছে এসব সফরে সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা প্রায় অভিন্ন ভাষায়   জানিয়েছেন, সরকারের ওই নির্দেশনার পর কয়েকদিন বিদেশ সফরের জিও জারি বন্ধ ছিল। নির্দেশনা প্রত্যাহার না হলেও এখনো আগের মতোই বিদেশ সফরের হিড়িক চলছে। পার্থক্য শুধু আগে এসব সফর সরকারি টাকা বা প্রকল্পের টাকায় দেখানো হতো। এখন নানা কায়দা করে অন্যের নামে চালানো হচ্ছে। ‘এশিয়ান সামিট অন এডুকেশন অ্যান্ড স্কিলস’ সম্মেলনে অংশগ্রহণেচ্ছু ওই প্রতিমন্ত্রীর দফতরে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানানো হয়, প্রতিমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সারসংক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাগে। দেশের প্রতিনিধিত্ব করতেই তাঁকে যেতে হচ্ছে। খরচ আয়োজক সংস্থা বহন করবে। এরপর প্রতিমন্ত্রী নিজ খরচে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেশে ফিরবেন।

 

 

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Recent Comments