প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত কয়েক মাস ধরেই বিশ্ব মন্দার আভাস দিয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করে আসছিলেন। এবার প্রধানমন্ত্রীর সুরেই কথা বলে বিশ্বকে খাদ্য, জ্বালানি তেলসহ বিশ্বে মহামন্দার বিষয়ে সতর্ক করল আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি।
ওয়াশিংটনের আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনের চতুর্থ দিনে স্থানীয় সময় ১৩ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে ‘স্টেপিং আপ ইন এ টাইম অব আনসার্টেনিটি’ শীর্ষক এক সংলাপে অংশ নিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রধান ও আইএমএফ এমডি এসব কথা বলেন।
বৈশ্বিক এই মন্দার কবলে পড়লে বিশ্বের ৩৫ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ। বিশ্বে ৪৮টি দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ এখন চরম খাদ্য সংকটে আছে। আইএমএফ বলছে, এর মধ্যে কোস্টারিকা, বসনিয়া ও রুয়ান্ডার অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ।সংস্থাটি জানায়, করোনা মহামারি, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ আর মোড়ল দেশগুলোর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা বিশ্বকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এরই মধ্যে এই সংকটের আঁচ লেগেছে ছোট বড় সব অর্থনীতির দেশের। এতে করে জ্বালানি তেলের চড়া দাম ও লাগামহীন মূল্যস্ফীতিতে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি হবে। এ সংকট থেকে মানুষকে বাঁচাতে সরকার প্রধানদের সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ।
আইএমএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, জ্বালানি সংকট আগামী দিনের অর্থনীতির গতি প্রকৃতি ঠিক করবে। সংকট সামাল দিতে তাই মুদ্রা নীতি ও রাজস্ব নীতির সতর্ক সমন্বয়ের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী বছরের বিশ্বে মহামন্দা দেখা দিতে পারে। মহামন্দার ফলে জ্বালানির চড়া দাম ও লাগামহীন মূল্যস্ফীতিতে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি হবে। এবারের মন্দা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ভয়াবহ হবে। এজন্য সংকট এড়াতে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে হবে। বিশেষ করে মহামন্দায় গরিব মানুষকে নিয়ে শঙ্কার কথা বলেছেন বিশ্বব্যাংক প্রধান।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ডেভিস ম্যালপাস বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি এখন রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলো। ২০২৩ এ বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমে যে এক দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়ানোর কথা বলা হচ্ছে তাতে দেখা গেছে এসময়ে জনসংখ্যাও বাড়ছে ১ :১ হারে ,ফলে এই প্রবৃদ্ধির সুফল পাবে না মানুষ বরং ৭ কোটি মানুষ এরই মধ্যে হতদরিদ্রের কাতারে যে নেমেছে তা বাড়তে পারে। এটি মহামন্দার বিপজ্জনক অবস্থার কাছাকাছি বলছি আমরা। এসব কিছুর মূলে জীবন যাত্রার বাড়তি খরচ।ডেভিড ম্যালপাস বলেন, উন্নয়নশীল দেয়গুলোতে অর্থ প্রবাহ কমায় মানুষের হাতে অর্থ প্রবাহও কমেছে। আমাদের এখন গরিবদের জন্য চিন্তা করতে হবে । হতাশার কথা হলো , সম্পদ বা মূলধন কিছু মুষ্টিমেয় দেশকেন্দ্রিক সেখান থেকে সহায়তা বা ঋণ হলেও তা পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর জন্য বরাদ্দ দিতে হবে। বিশ্ব ব্যাংকও তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।