কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন কমিশন দ্বিতীয় বারের মতো দেশব্যাপী জেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পর্ণ করতে পেরেছে। নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শকুনের চোখের মত সিসি ক্যামেরায় চোখ ছিল নির্বাচন কমিশনের। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে অনুষ্ঠিত এ ভোট নিয়ে নির্বাচনের আগেভাগে বেশ উত্তাপ থাকলেও ভোটের দিন মোটামুটি সুষ্ঠুভাবেই ভোটগ্রহণ করতে পেরেছে ইসি। এজন্য সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গাইবান্ধা উপনির্বাচনের বার্তা সবার কাছে পৌঁছে গেছে বলে মনে করেন তিনি। বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচনে। অন্যান্য নির্বাচনেও প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করতে চায় ইসি।
জেলা পরিষদে সরাসরি সাধারণ ভোটারদের অংশগ্রহন নেই। স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এখানে ভোটার। তাই জনমনে উৎসব তেমন না থাকলেও ভোটের চিত্র দেখার আগ্রহ ছিল রাজনৈতিক মহলে। সকাল থেকেই ইসি ভবনে বসে এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনাররা। প্রায় ১৪শ ক্যামেরায় ধরা পড়ে ৪৭৭ কেন্দ্রের ভোটের চিত্র। কোথাও জটলা দেখলে স্ক্রিনে বড় করে তা পর্যবেক্ষণ করেন কমিশনাররা।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দেশের ৫৭ টি জেলায় একযোগে অনুষ্ঠিত হয় ভোট। জেলা পরিষদ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর উপজেলা পরিষদেও ভোটগ্রহণ সম্পর্ণ হয়। বেসরকারিভাবে বিকাল ৪টা থেকেই ফলাফল ঘোষণা করতে থাকে রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ সব কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তারা। প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, ৪৯ জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, ৯ জেলা পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং একটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হন।
রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে ইসি কার্যালয় থেকে ভোট মনিটরিং করা হয়। প্রতিটি ভোট কক্ষে ইসির স্থাপিত সিসি ক্যামেরায় ছিল সবার নজর। একই সঙ্গে ইভিএমে ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে কোন ধরণের ব্যত্যয় যাতে না ঘটে সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখে ইসি। যদিও এটি জাতীয় নির্বাচন নয় ভোটারও হাতে গোনা তারপরও ইভিএমে ভোটে যেন দুর্নাম না হয় তা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করে ইসি। তবে জাতীয় নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার চোখে ইভিএমে ভোট কতটা নিষ্কণ্টক করতে পারবে সেটা সময়েই বলে দেবে।
প্রিসাইডিং অফিসার রথীন্দ্রনাথ রায় জানান, উপজেলা পরিষদের ৩ নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নে মোট ১৫৯ জনপ্রতিনিধি ভোটার থাকার কথা। কিন্তু ১১টি ইউনিয়নে ধাপে ধাপে নির্বাচন হয়ে শেষ হয়েছে গত জুলাই মাসে। ১১টির মধ্যে ৩টির নির্বাচন গত ২০২১ সালের শেষদিকে হয়েছে। এছাড়া পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনও হয়েছে নির্ধারিত সময়ে। ফলে উপজেলা, পৌরসভা ও ৩ ইউনিয়নের ৫৫ জনপ্রতিনিধি জেলা পরিষদের সদস্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন আগেই। এর মধ্যে একজন সদস্য মারা গেছেন। কিন্তু বাকি ৮ ইউনিয়নে তিন ধাপের নির্বাচনে যারা পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সদস্য পদ বহাল থাকায় ৮ ইউনিয়নের মাত্র ২৯ জন ভোট দিতে পারছেন। অর্থাৎ সব মিলে ভোট দিতে পারছেন মাত্র ৮৪ জন।