ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় ভোটারের ভোটদানের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি। তাই কোনো ধরনের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য না দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।২৩ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন ব্যখ্যা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংস্থাটির যুগ্ম সচিব ও জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটকক্ষের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে কারো কারো বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।প্রচারিত বক্তব্য মতে ভোটকক্ষের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে কে কাকে ভোট দিচ্ছে তা দেখা মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সেই কাজটি করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে।
এ ধরনের বক্তব্য মোটেও সঠিক নয় এবং বিভ্রান্তিকর। প্রকৃত বিষয় হলো- জাতীয় সংসদের ৩৩ গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনের নির্বাচনে ভোটকক্ষে ভোট প্রদানের সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য নির্বাচন কমিশন ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছিল। গোপন কক্ষে ভোটার কাকে ভোট দিলেন তা দেখার কোনো সুযোগ নেই। তবে গোপনকক্ষে ভোটারের সঙ্গে কেউ প্রবেশ করল কি না বা ভোটার ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করল কি না, একই সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করল কিনা, ভোট প্রদানের সময় কেউ উঁকি দিয়ে দেখে কিনা বা পাশে দাঁড়িয়ে কোনো নির্দেশ প্রদান করল কিনা তা দেখা যায়। ইভিএম এ কিভাবে ভোট প্রদান করতে হয় সে বিষয়ে ভোটার শিক্ষার জন্য প্রচারণা করা হয়েছে।
এছাড়া একজন ভোটারকে ভোট প্রদানের জন্য গোপনকক্ষে প্রবেশের পূর্বেই সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাগণ ডামি ব্যালট ইউনিটে দেখিয়ে দেন কিভাবে ভোট দিতে হবে। কাজেই ভোট কিভাবে দিতে হবে এটা দেখানোর জন্য ভোটারের সঙ্গে গোপনকক্ষে অন্য কারো প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৩১(৭) ধারা অনুযায়ী ভোটার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বা অন্যভাবে এরূপ অক্ষম হন যে তিনি কোনো সঙ্গীর সাহায্য ছাড়া ভোট প্রদান করতে পারবেন না সে ক্ষেত্রে প্রিজাইডিং অফিসার ঐ ভোটারের পছন্দমতো ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে তার ভোটপ্রদানে সাহায্য করার জন্য গোপন কক্ষে নিতে পারবেন। তার সাথে কোনভাবেই কোনো ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা, এজেন্ট বা অন্য কেউ গোপন কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না। অর্থাৎ বিষয়টি খুবই স্পষ্ট যে ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে কোনোক্রমেই ভোট প্রদানের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি।
নির্বাচন কমিশন প্রতিটি ভোটারের ভোট প্রদানের গোপনীয়তা রক্ষায় আইন অনুযায়ী সব ব্যবস্থাই গ্রহণ করে থাকে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটে এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান না করে আইন অনুযায়ী যথাযথভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করার জন্য নির্বাচন কমিশন সবার প্রতি আহবান জানাচ্ছে।গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচন সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করে অনিয়ম পাওয়ায় পুরো নির্বাচন বন্ধ করে দেয় ইসি, যা নিয়েই নানা মহল থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে সংস্থাটিকে।