বরগুনার আলোচিত রিফাত শরিফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিনের জন্য হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চে আবেদন করা হয়েছে। প্রথম দফায় ব্যর্থ হওয়ার পর নতুন করে এই আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে ৮ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অবকাশকালীন বেঞ্চে শুনানির পর জামিন পাওয়ার আশা না দেখে মিন্নির আইনজীবী জেডআই খান পান্না আবেদনটি ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। ওই আবেদনটিই রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে দাখিল করা হয়েছে।
একজন আইনজীবী বলেছেন, ‘আজ আমরা জামিন আবেদনটি কোর্টে সাবমিট করেছি। আগামীকাল (আজ) সম্ভবত কার্যতালিকায় আসবে। এলেই হেয়ারিং করব।’ আদালতে ১৬৪ ধারায় মিন্নিসহ আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না আনতে পারলে জামিন হবে না, হাইকোর্টের এমন শর্তের পর ৮ আগস্ট আবেদনটি ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী জেডআই খান পান্না বলেন, ‘আমরা ১৬৪ পাইনি। আর এ ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে, ১৬৪ নিয়ে আমাকে জামিন আবেদন করতে হবে। চার্জশিট না হলে আমাকে ১৬৪ দেবে কেন পুলিশ। চার্জশিট হওয়ার আগে ১৬৪ দেয়ার বিধান নেই।’
পরে ১৬ জুলাই সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওইদিন রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
পরদিন ১৭ জুলাই বিকেলে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শুনানি শেষে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কিন্তু ওইদিন মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।
রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে ১৯ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে মিন্নি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (২২ জুলাই) প্রথমবার মিন্নির জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে ওইদিনই শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এরপর (২৩ জুলাই) মিস কেস দাখিল করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে ফের জামিনের আবেদন করেন মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নথি তলব করে (৩০ জুলাই) এ জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। শুনানির পর ৩০ জুলাই জামিন নাকচ করেন আদালত।
এরপরই জামিনের জন্য হাইকোর্টে গিয়েছেন মিন্নি।