ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে এখন গোটা বিশ্বের চোখ কাতারে। আর চার দিন পরই বাজবে বিশ্বকাপের বাঁশি। প্রতিযোগিতায় লড়বে না বাংলাদেশ। তবু ‘বাংলাদেশ’ থাকবে মাঠে। বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক ফিফা বাংলাদেশ থেকে ৬ লাখ পিস জার্সি নিয়েছে। ফিফা কর্মকর্তা, রেফারি, বলবয় ও গ্যালারির অনেক দর্শকের পরনে থাকবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ জার্সি।
জানা গেছে, দুই দফায় মোট ৬ লাখ পিস জার্সি পৌঁছে গেছে কাতারে। মস্কোভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান স্পোর্টস মাস্টারের মাধ্যমে এসব জার্সি বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়। বিশ্বকাপ চলাকালে ফিফার সব পর্যায়ের কর্মীরা এ পোশাক ব্যবহার করবেন। বাংলাদেশ থেকে গেছে লাল, সাদা, বেগুনি ও গোলাপি রঙের জার্সি। চট্টগ্রামের সনেট টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানায় তৈরি হয়েছে এসব জার্সি। জার্সিতে বিশ্বকাপের লোগো, রং ও মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। জার্সিতে পণ্যের উৎস দেশ হিসেবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা রয়েছে।
জানতে চাইলে সনেট টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইয়াছিন বলেন, বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে বাংলাদেশের পোশাক ব্যবহার হচ্ছে- এটা দেশের জন্য অনেক গৌরবের। ফিফার কাজ করতে পারাও আমাদের জন্য সম্মানের।
প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ না থাকলেও ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লোগোর পোশাকের মাধ্যমে কাতার বিশ্বকাপে আছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, স্পর্শকাতর পণ্য হিসেবে ফিফার জার্সি তৈরি করার কাজটি সহজ ছিল না। অনেক সতর্কতার মধ্যে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবেই সব কাজ শেষ করতে পেরেছি। তিনি বলেন, মূলত স্পোর্টসওয়্যারই বেশি উৎপাদন এবং রপ্তানি করি আমরা। যে কোনো বড় আসরের জার্সি, জ্যাকেট, ট্রাউজার, শর্টসসহ যে কোনো স্পোর্টসওয়্যার সরবরাহ করার সক্ষমতা রয়েছে আমাদের।
জানা গেছে, রাশিয়া বিশ্বকাপেও জার্সি সরবরাহ করে সনেট টেক্সটাইল মিলস।তবে পরিমাণে ছিল এবারের অর্ধেক। বিশ্বকাপ ছাড়াও উয়েফা নেশন্স লিগ এবং ইউরো কাপের মতো বড় আসরেও জার্সি সরবরাহ করেছে এ প্রতিষ্ঠান। গত ইউরো কাপের জন্য টি-শার্ট এবং জ্যাকেটও তৈরি করেছিল। তাদের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর জার্সি তৈরি করা।
সূত্র জানায়, চলচ্চিত্র অভিনেতা অনন্ত জলিলের সাভারের হেমায়েতপুরে এজেএল অ্যাপারেলস ইন্ডাস্ট্রি থেকেও কাতার বিশ্বকাপে একটি দেশের খেলোয়াড়দের জন্য জার্সি রপ্তানির কথা ছিল। তবে এ কারখানার শীর্ষ এক কর্মকর্তা সমকালকে জানান, এ বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ক্রেতার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আর বিশ্বকাপের কোনো জার্সি তারা তৈরি করেনি। গত ফুটবল বিশ্বকাপে তারা জার্সি সরবরাহ করেছিল।
উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্পোর্টসওয়্যার বা খেলার পোশাক সাধারণত কৃত্রিম তন্তুতে তৈরি। বাংলাদেশে পর্যায়ক্রমে এ ধরনের পোশাক উৎপাদন বাড়ছে। এ খাতে বাড়ছে নতুন বিনিয়োগও। অবশ্য এখনও পোশাক উৎপাদনে প্রথাগত তুলানির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। রপ্তানিমুখী মোট পোশাকের ৭৬ শতাংশই তুলায় তৈরি।