পর্যটনের ভর মৌসুম চলছে। এসময় দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিন প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর থাকতো। কিন্তু চলতি বছর নাব্য সংকটের ‘অজুহাতে’ টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না দেওয়ায় এক প্রকার পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে প্রবাল দ্বীপটি।
কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচল করা একমাত্র জাহাজ কর্ণফুলী শিপে দৈনিক পাঁচ-সাতশ পর্যটক দ্বীপে যাচ্ছেন। তবে স্বল্প সংখ্যক পর্যটকে আবাসন ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের কেউ পুষিয়ে উঠতে পারছেন না। ফলে কোটি টাকা বিনিয়োগ করা শতাধিক আবাসন ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী, কয়েকশ ভ্যানচালক, ডাব ও মাছ বিক্রেতার মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
আবাসন ব্যবসায়ী মো. দিদারুল আলম বলেন, সেন্টমার্টিনের প্রায় ১০ হাজার মানুষের ৯০ শতাংশই পর্যটন শিল্পে জড়িত। বাকি ১০ শতাংশের রুটিরুজি নির্ভর করে সাগরে মাছ ধরে৷ পর্যটনশিল্পে জড়িত ৯০ শতাংশ মানুষের আয় হয় মাত্র চার মাস। এ চার মাসের আয় দিয়ে বছরের বাকি সময় অতিবাহিত করেন তারা। কিন্তু ভরা মৌসুমে দ্বীপে আশানুরূপ পর্যটক না থাকায় লগ্নি উঠবে বলে মনে হয় না। পর্যটক খরা কাটিয়ে না উঠলে দ্বীপে হাহাকার দেখা দেবে।
সেন্টমার্টিন হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বলেন, পর্যটন মৌসুমে হোটেল, দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট, ডাব বিক্রি, রিকশাসহ নানা তৎপরতায় ব্যস্ত থাকে দ্বীপের মানুষ। কিন্তু এখন মুষ্টিমেয় পর্যটকের আনাগোনা। ফলে অনেকে বেকার হয়ে পড়েছেন।
সি-ক্রোজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের স্কোয়াব সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, পর্যটনশিল্প ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে নাফ নদীর বিকল্প পথে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল সম্ভব। নাফ নদীর নাব্য সংকট এড়াতে বর্তমানে দমদমিয়া ঘাটের বিকল্প হিসেবে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন সৈকত থেকে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা যায়। ওখানে জাহাজ মালিকদের নিজস্ব অর্থায়নে একটি অস্থায়ী টেকসই কাঠের জেটি নির্মাণ করে পন্টুন স্থাপনের মাধ্যমে জাহাজ চলাচল শুরু করলে পর্যটকদের ঝুঁকিমুক্তভাবে পার করাসম্ভব। সাবরাং পয়েন্ট থেকে জাহাজ বের হয়ে বঙ্গোপসাগরের মোহনা পড়ায় জাহাজ সরাসরি সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটে পৌঁছানো সহজ। এতে সময়ও কম লাগবে।