কাতার বিশ্বকাপে আগামীকাল শুক্রবার দিনের ও টুর্নামেন্টের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার মোকাবেলা করবে নেইমারের প্রত্যাবর্তনে আত্মবিশ্বাসী ব্রাজিল। শেষ ষোলর ম্যাড়মেড়ে পারফর্মেন্স করা ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে খেলার বিষয়ে আশাবাদী ব্রাজলীয়রা।
শেষ ষোলর লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ৪-১ গোলে অসাধারণ জয় পেয়েছে ব্রাজিল। ওই ম্যাচে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির হয়ে গোল করেছেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রিচারলিসন, লুকাস পাকুয়েটা ও পেনাল্টি থেকে নেইমার। এই জয়ে কাতারের প্রতিপক্ষ দলগুলোকে সতর্কবার্তা পাঠাতেও সক্ষম হয়েছে তারা।
জয়ের পর উৎসব করেছে ব্রাজিলীয়রা। নাচের মাধ্যমে খেলোয়াড়রা তাদের গোল উদযাপন করেছে, এমনকি ৬১ বছর বয়সি কোচ তিতেও তাদের ওই উদযাপনে সামিল হয়। দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ সেলেকাওদের পারফর্মেন্স এতটাই রোমঞ্চকর ছিল যে এটিকে তুলনা করা হয়েছে অতীতের বেশ কিছু নজরকাড়া পারফর্মেন্সের সঙ্গে। যেমনটি দেখা গেছে ১৯৭০ সালের পেলের দল থেকে ১৯৮২ সালের সক্রেটিসের সময়কালের মধ্যে।
তবে এটি ছিল ব্রাজলীয়দের একমাত্র আত্মবিশ্বাসের ম্যাচ। এর আগে গ্রুপের তিন ম্যাচে মাত্র তিনটি গোল করতে পেরেছিল পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা, সেখানে ক্যামেরুনের বিপক্ষে একটি ম্যাচে পরাজিতও হতে হয়েছে তাদেরকে। ১৯৯৮ সালের পর গ্রুপ পর্বে এটি ছিল ব্রাজিলের প্রথম পরাজয়।
বিশ্বকাপে সম্প্রতি ক্রোয়েশিয়ার যে পারফর্মেন্স, তাতে এডুকেশন সিটিতে তাদের বিপক্ষে ব্রাজিল সহজ জয় পেতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যদিও ২০০২ বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের পর প্রতিটি বিশ্বকাপেই ইউরোপীয় দলের কাছে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে। তন্মধ্যে নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে এবং চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের কাছে পরাজয় উল্লেখযোগ্য।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জয়লাভের পর ব্রাজিলীয় সুপারস্টার নেইমার বলেছিলেন,‘ এটি সত্যি যে আমরা শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছি। তবে এ জন্য আমাদেরকে ধাপে ধাপে এগুতে হবে। এটি ছিল আমাদের চতুর্থ ম্যাচ। আরো তিনটি ম্যাচ বাকী আছে এবং আমরা এজন্য প্রস্তুত। আমরা শিরোপা জয়ের দিকে তাকিয়ে আছি।’
বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পাওয়া নিজেদের প্রথম ম্যাচে পায়ের গোঁড়ালিতে চোট পাওয়ার পর নেইমার মাঠে ফিরেছিলেন শেষ ষোলর ওই ম্যাচ দিয়ে। যে ম্যাচে লেফট ব্যাক ডানিলোর প্রত্যাবর্তনটাও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচে ফুলব্যাক এ্যালেক্স টেলাসকে পাচ্ছেন না কোচ তিতে। তবে সুসংবাদ হচ্ছে ফের অনুশীলনে ফিরেছেন এ্যালেক্স সান্দ্রো। অচিরেই দলে ফিরতে পারেন তিনি। আর সেটি যদি ঘটে তাহলে ডানিলো চলে যাবেন রাইট ব্যাকে আর একাদশ থেকে বাদ পড়তে পারেন এডার মিলিটাও।
এদিকে চার বছর আগে বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা ক্রোয়েশিয়াকে আগের তিনটি ম্যাচেই অতিরিক্ত সময়ে খেলতে হয়েছে। যেমনটি এবারের আসরেও হয়েছে। জাপানের বিপক্ষে ম্যাচকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যাওয়ার পর টাইব্রেকারে পৌঁছায় তারা। সেখানে ব্লু সামুরাইদের ৩-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছায় ক্রোয়েশিয়া। এবারো দলটির কোচের দায়িত্বে আছে ডালিচ এবং নেতৃত্বে রয়েছেন ৩৭ বছর বয়সি লুকা মড্রিচ। অর্থাৎ দলটির মেরুদন্ড সেই চার বছর আগের মতোই।
মিডফিল্ডার মাতেও কোভাচিচ বলেন,‘ আমি মনে করি লুকা মড্রিচের কদর বিশ্বের সবাই জানে। তিনিই আমাদের নেতা, আমাদের সেরা খেলোয়াড়। আমরাও তাকে মাঠে পেয়ে গর্বিত। আমরা প্রিমিয়ার লিগে কঠিন শারিরিক খেলায় অভ্যস্ত। এটি আমরা ব্রজিলের বিপক্ষে দেখাতে চাই।’